
কর্মকর্তা ডা: মো: আসাদুল হক জানান, এ জেলায় চলতি বছরে ১৯ হাজার কৃষক গোয়ালে গোয়ালে অর্ধলক্ষাধিক গরু কোরবানির হাটগুলোতে বিক্রির জন্য মোটাতাজা করা হচ্ছে। কেউ কেউ একটি/দুটি আবার কেউ ৭-৮টি করে খামারে গরু মোটাতাজা করছে। কুষ্টিয়া শহরে ভারতীয় গরু অনু:প্রবেশ প্রসঙ্গে এ পশুসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, বিগত বছরগুলোতে ভারতীয় গরু অনু:প্রবেশ রোধে সীমান্ত এলাকায় বিজিবির নজরদারী বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছিলাম। এ বছরও বিজিবির নজরদারী বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।মাঝারি ও বড় সাইজের গরুর প্রধান বজার হচ্ছে ঢাকার গাবতলীর হাট। এ ছাড়াও এ অঞ্চলের বালেপাড়া, আলমডাঙ্গা, উজানগ্রাম, হরিণারায়নপুর, পান্টি, মুন্সীগঞ্জ, বদরগঞ্জ, মিরপুর, ভাটই, শৈলকুপা, বাঁশগ্রাম, গাংনী, কুমারখালীসহ বিভিন্ন পশুর হাটে কোরবানির আগে এসব মোটাতাজা গরু তোলা হয়। ব্যাপারীরা হাট থেকে এসব গরু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুরের টেপাখোলা, বরিশাল, সিলেট, প্রভৃতি স্থানে ট্রাকযোগে চালান নিয়ে যায়। আবার ব্যাপারীরা গৃহস্থের বাড়ি থেকেও গরু কিনে ঈদের আগে চালান করে। বড় খামার মালিকেরা নিজেও ট্রাকে করে গাবতলীর হাটে চালান নিয়ে যায়।কুষ্টিয়ার কুমারগারা গ্রামের, কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন কোরবানির পশুহাটের জন্য তার খামারে ১ডজন গরু মোটাতাজা করনের কাজ চলছে। অন্য বছরের চেয়ে এ বছর গো-খাদ্যার দাম বৃদ্ধি হওয়ায় গরু মোটাতাজা করনে খরচও দ্বিগুন বেড়ে গেছে। তিনি বলেন গত বছর তার একটি গরুর দাম হয়েছিল ৩ লাখ টাকা। পরবর্তিতে ভারতীয় গরু অনু:প্রবেশ করায় সেই গরু ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হয়। গত বছরের ন্যয় এ বছরও যদি ভারতীয় গরু অনু:প্রবেশ রোধ না করা যায় তাহলে কৃষকদের লোকশানই গুনতে হবে।কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের আমানুলাহ রাজা জানান, ৩ বছর ধরে কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা করছেন। ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ২টি ফ্রিজিয়ান ও ৩টি শাহীওয়াল ও নেপালি জাতের বাছুর কিনে এক বছর ধরে পালছেন । নেপালি জাতের একেকটির দাম ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা করে উঠেছে। তিনি বলেন, ভারতীয় গরু না এলে এবার চড়া দামে বিক্রি করতে পারবেন।তার ৫টি গরু এক বছর পালন করতে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি বলেন , গো-খাদ্যের দাম চড়া হওয়ায় গরু মোটাতাজাকরণে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। চালের খুদ প্রতি কেজি ৩০/৩৫ টাকা, ছোলা ৪৫/৫০ টাকা কেজি, খৈল ৩০/৩৫ টাকা, ধানের বিচালী একশত আটির দাম ২২৫/ থেকে ২৫৫ টাকা, গমের ভুষি এক কেজি ৩৫/৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কৃষকেরা জানান, কোরবানির তিন মাস আগ থেকে গরুর খাবারের পরিমান বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এত গরু তেজী ও দেখতে সুন্দর হয়। কয়েক বছর আগেও কোরবানির হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর আধিক্য ছিলনা। বর্তমান দৃশ্যপট বদলে গেছে। বর্তমানে ভারতের চোখ ধাঁধানো গরুতে হাটগুলো ভরপুর। ক্রেতারাও এসব গরু কিনতে বাধ্য হচ্ছে। দেশের অর্থনীতে বড় অবদান রাখা গবাদি পশু মোটা-তাজা করনের এ প্রকল্পটি টিকিয়ে রাখতে ভারতীয় গরু অনুঃপ্রবেশ রোধে সরকার কার্যকারী পদক্ষেপ নেবে এমনটাই মনে করছেন খামার মালিকেরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন