বুধবার, মার্চ ০৫, ২০১৪

দুর্নীতিবাজ উপ-সহকারী সোহরাব-কামরুজ্জামান কাজের দিকভাল করার দায়িত্বে নিয়োজিত

মহাজোট সরকারের অর্জন কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতু নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কুষ্টিয়া এলজিইডি’র দুইজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কাজের দিক ভাল করার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকায় মহাজোট সরকারের অর্জন কুষ্টিয়া-হরিপুর সেতু নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।এলজিইডির দুর্নীতিবাজ উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন ও কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে এই সেতু নির্মিত হলে ‘রানা প্লাজা’র করুণ পরিণত হরিপুরবাসীকে ভোগ করতে হতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জনগুরুত্বপূর্ন উপজেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়া এলজিইডি ৭১,০১,৫৫,৬৩২ টাকার চুক্তিতে ঢাকার মেসার্স মীর আক্তার হোসেন লিঃকে এই সেতু নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করে। ১৭/১২/২০১৩ ইং তারিখ হতে ১৬/১২/২০১৫ ইং তারিখ মোট ৭৩০ দিনের মধ্যে এই সেতু নির্মাণ করার সময় বেঁধে দেয়া হয়। কার্যাদেশ পেয়ে দেশের স্বনামধন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের স্বত্তাধীকারী যথাসময়ে কাজ শুরু করে। কুষ্টিয়া এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন ও কামরুজ্জামানকে উক্ত কাজ দেখভাল করার দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অভিযোগ ওঠে রাতের বেলায় ঢালাই এর জন্য পাথরের চিপ ও সিমেন্ট সিডিউল মোতাবেক না মিশিয়ে ৮/১ ভাগে সিমেন্ট ও পাথর মিশ্রণ করে ঢালাই প্রদান করছে। গতকাল সরেজমিন সেতুর নির্মাণ কাজ দেখতে গলে আরো ভয়াবহ অনিয়ম চোখে পড়ে। দেখা যায়, পাথরের চিপের সাথে সমপরিমান ফিলিংস্যান্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহরাব হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি
কোন সদোত্তর দিতে পারেননি। প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান. কাজের শুরু থেকেই ঐ প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে চলছে অনিয়ম। কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতুর কাজ হচ্ছে গোজামিল দিয়ে। অনিয়ম ঢাকতে রাতে হচ্ছে ঢালাই কাজ। সব অনিয়ম দুর্নীতি দেখেও না দেখার ভান করে রয়েছেন ওই কাজের তত্ত্ববধান করা দুই উপ-সহকারী প্রকৌশলী। জানা যায়, হরিপুরবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলন, আওয়ামীলীগ নেতাদের নির্বাচনী প্রতিশ্র“তির ফসল হরিপুর-কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু। গত ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে সেতু নির্মানের চুক্তি হয় ঢাকার মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড নামের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের। জনগুরুত্বপূর্ণ উপজেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চেইনেজ ৫০৪.৫৫ মিলি প্রি স্টেসড গার্ডার ব্রীজ নির্মানের জন্য সরকার একাত্তর কোটি এক লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার ছয়শত বত্রিশ টাকা বরাদ্দ করে। ৭৩০ দিনের সময় নিয়ে সরকারের সঙ্গে নির্মান প্রতিষ্ঠান চুক্তি সম্পাদন করেন। চুক্তি সম্পাদনের পরে কাজ শুরু করে নির্মানাধীণ প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী ঢালাইয়ে এক সিমেন্ট, দেড় বালি এবং তিন পাথর দেয়ার কথা। কিন্তু কোন নিয়ম মানা হয়নি। ফিলিং বালি নামমাত্র সিমেন্ট এবং যতসামান্য পাথর দিয়ে ঢালাই দেয়া হচ্ছে। দিনের আলোয় ঢালাইয়ের কাজ না করে রাতের অন্ধকারে চুপিসারে সমানে ঢালাই দিয়ে চলেছে নির্মান প্রতিষ্ঠান। এই কাজ বুঝে নেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান এবং সোহরাব হোসেনকে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে প্রকৌশলীরা ঠিকাদারের নির্মানাধীন ঘরে ঘুমিয়ে রয়েছেন। আর দায়সারা ভাবে দ্রুত গতিতে ঢালাই দিয়ে চলেছে শ্রমিক মিস্ত্রীরা। প্রকৌশলীরা বলছেন, দায়সারা কাজ হলে নির্মানের পরই ভেঙ্গে পড়বে ব্রীজটি। এতে সরকারে কোটি টাকা পানিতে যাবে এবং জানমালের নিরাপত্তার অভাব হয়ে পড়বে। জানা যায়, প্রতিদিন নগদ নারায়ন নিয়ে ওই দুই প্রকৌশলী সব দেখেও না দেখার ভান করছেন। এব্যাপারে হরিপুরে চরম অন্তোষ দেখা গেছে। এই নিয়ে যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা রয়েছে। এব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, হরিপুরের মানুষের প্রাণের দাবী পূরণের জন্যই জননেতা মাহাবুব উল আলম হানিফ সহ আওয়ামীলীগের নেতারা মন্ত্রণালয়ে তদবির করে এই সেতুর কাজ নিয়ে এসেছেন। এখানে কোন রকম দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন