সোমবার, মার্চ ১৭, ২০১৪

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ চাঁদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান

মনির উদ্দিন মনির, ভেড়ামারা : ৭১’র রনাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, এক কালের তুখোড় সাংবাদিক আবদুল্লাহ চাঁদ জীবনের শেষ সময়ে এসে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের ৮ নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশনেন। যুদ্ধচলাকালীন সময়ে বহু সম্মুখ যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে দেশ কে শুত্র“ মুক্ত করেন। আবদুল্লাহ চাঁদ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভার সাবেক কমিশনার এবং ৮ নং ওয়ার্ডের মঠপাড়া এলাকার মৃত ইছাহাক আলীর পুত্র।৬০’র দশকে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ভেড়ামারা প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন আবদুল্লাহ চাঁদ। সাংবাদিকতা করা কালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষনে উজ্জিবিত হয়ে তিনি মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এরপর সংঘটিত হয়ে মুজিবনগর সরকার গঠনের পরদিন ১৮ এপ্রিল’৭১ তিনি ধর্মদহ বর্ডার অতিক্রম করে ভারতের শিকারপুর এ্যাকশন ক্যাম্পে পৌছান। তখন এই ক্যাম্পের ইনচার্জ ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থানের ল্যাফটেন্যন্ট জাহাঙ্গীর আলম। তিনি স্বল্প সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষন দিয়ে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ চাঁদ বলেন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকে সব থেকে কঠিন কাজ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শেল্টার খুঁজে বের করা। তখন আমি ছিলাম অবিবাহিত টগবগে যুবক। যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে সুকৌশলে বিভিন্ন ছদ্মবেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকায় ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শেল্টার খুঁজে বের করতাম। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সফল অভিযান পরিচালনা করে একের পর এক পাক হানাদারদের ঘাঁটিগুড়িয়ে দিতাম। যুদ্ধকালীন সময়ে এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। তিনি বলেন, বারখাদা,
হোগলবাড়ীয়া, ভাগজত সহ একাধিক স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিই। মুক্তিযুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন তালিকা হলেও কোন তালিকায় নাম লেখান নি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম দেশ কে শুত্র“ মুক্ত করার জন্য। কোন স্বার্থ হাসিলের জন্য তালিকায় নাম উঠানোর জন্য নয়। সে কারনে এ বিষয়ে কোন অগ্রহ ছিলনা তার। তারপরও ২০০১ সালের বিজয় দিবস সংখ্যায় তার নাম প্রকাশ করা হয়। যার সিরিয়াল নং ০৪১১০৩০২৩৬। এরপরও তিনি আগ্রহ দেখান নি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নেওয়ার। কিন্তু জীবনের শেষ সময়ে এসে তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান। বয়সের ভারে নজ্বু হয়ে অনেকটাই অচল হয়ে গেছেন। বর্তমানে তিনি অসহায় জীবন যাপন করছেন। তার শেষ ইচ্ছা মুক্তিযোদ্ধার সম্মান নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন