সোমবার, মার্চ ২৪, ২০১৪

প্রসাশনের অবহেলায়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের বেহাল অবস্থা

রাশেদুন নবী রাশেদ, ইবি : বাংলাদেশের দক্ষিন পূর্ব জনপদের একমাত্র সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। যা কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জেলার মধ্যবর্তী শান্তিডাঙ্গা দুলালপুরে অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদটি বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তর মসজিদ। এতে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার মুসল্লীর একসাথে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৪ বছর পেরিয়ে গেলেও মুসলমানদের এ মসজিদটির ব্যবস্থাপনার কোন উন্নতি হয়নি। প্রশাসনের অবহেলায় বর্তমানে এ মসজিদটির অবস্থাপনায় চরম দূভোর্গে পড়ছে মুসল্লীরা। বাজে সাউন্ড সিস্টেম, অযুখানার বেহাল অবস্থা, মসজিদে লাগানো অধিকাংশ ফ্যান বিকল হয়ে পড়েছে। ফলে প্রচন্ড গরমে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মুসল্লীরা। এছাড়া পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দেশের তৃতীয় বৃহত্তর এ মসজিদটির সৌন্দর্য। মসজিদের গায়ে ধরেছে মরিচা। পরিস্কার করা হয়না মসজিদের অযুখানা ও প্রসাবখানা। ফলে মসজিদের আশেপাশে সৃষ্টি হয়েছে ভুতড়ে পরিবেশের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র সৌন্দর্যমন্ডিত কেন্দ্রীয় মসজিদটি প্রতিষ্ঠার ২২বছর পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতায় এর পুর্নাঙ্গ রূপ লাভ করতে পারেনি। বরং আরো সৌন্দর্যর ঘাটতিই চোখে পড়েছে। সমাপ্ত করতে পারেনি এর নির্মান কাজ। যেটুকু নির্মাণ হয়েছে তাও আবার অবস্থাপনায় ভরে ওঠেছে। অথচ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ গুলো যদিও আমাদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদটির থেকে অনেক ছোট, কিন্তু সেগুলোর পরিবেশের দিকে তাকালে চোক্ষু স্থির হয়ে যায়। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদটি কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ২২বছর পরেও সেরকম পরিবেশ ফিরে আনতে পারেনি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাথে মসজিদ কেন্দ্রীক ক্যাম্পাস গড়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৪ বছর পরেও মুসলমানদের ধর্মীয় উপসনালয় কেন্দ্রীয় মসজিদটি পূর্নাঙ্গরুপে নির্মিত না হওয়ায় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বার বার এ মসজিদটির উন্নতির জন্য বাজেট ঘোষনা করা হলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায়
ব্যাহত হয়েছে এর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা। বর্তমানে এ মসজিদটিতে একসাথে ৮ হাজার লোক জামায়াতে নামাজ আদায় করতে পারলেও মসজিদের ভিতরে ভাল মানের সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় পিছনের কাতারের মুসল্লীরা ইমামের খুৎবা, তাকবীর ভালভাবে শুনতে পায় না। ফলে অনেক সময় নামাজের চরমভাবে বেঘাত ঘটে। মসজিদে লাগানো অধিকাংশ ফ্যান দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে, এতে প্রচন্ড গরমে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মুসল্লীরা। এছাড়া দেয়ালে লোনা ধরে এখনই রং চটে যাচ্ছে ও দেয়াল খসে পড়ছে। মসজিদের ভিতরের মাকড়শার জালে ভরে উঠেছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ভবনগুলোর টয়লেট ও প্রসাবখানার যে পরিবেশ রয়েছে তার থেকে এ মসজিদটির অযুখানা, টয়লেটের পরিবেশ আরও নাজুক। অযুখানায় বসে অযু করতে গেলে নিচের পচাঁ পানি কাপড়ে লেগে নাপাক হয়ে যায়, প্রসাবের দুর্গন্ধে ভরে যায় নাক, অযুখানার ভিতরের দেয়াল গুলোতে প্লাস্টার না থাকায় দেয়ালের সিমেন্ট খসে পড়ে ইট বেরিয়ে পরেছে, আসে পাশে দেয়ালে শ্যাওলা ধরে সৃষ্টি হয়েছে ভুতুড়ে পরিবেশ। ভাল লাইটিং ব্যবস্থা না থাকায় রাতের বেলায় অযু করতে গেলে ভয়ে গা ছম ছম করে ওঠে। এ ব্যাপারে মসজিদের পেশ ইমাম ড. শোয়ায়েব আহমেদ বলেন, ‘মসজিদের ভিতরে ভালোমানের সাউন্ড সিস্টেম ও ফ্যান মেরামতের জন্য ও এর পরিবেশ পরস্কিার-পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রসাশনকে বেশ কয়েকবার নোট দেয়া হয়েছে কিন্তু এ পর্যন্ত কোন ফল লাভ হয়নি।’ মসজিদ কমিটির আহব্বায়ক ট্রেজারার প্রফেসর ড. আফজাল হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমাকে তোমরা (সাংবাদিকরা) ফোন দিয়ে বিরক্ত করবেনা। আমার কোন সাংবাদিকের দরকার নেই। পরে তিনি কিছু না বলে ফোন কেটে দেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন