বৃহস্পতিবার, মে ২৮, ২০১৫

বেনামে কোটি টাকার সম্পতি ক্রয় : ৬ মামলা মাথায় নিয়ে সরকারী দায়িত্ব পালন করছেন ডাঃ সুরেশ তুলসান

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
স্টাফ রিপোর্টার : এক যুগ ধরে নিজ জেলায় পোষ্টিং নিয়ে নামে বেনামে ৮ মামলায় লড়ছেন কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের সরকারী অধ্যাপক ডাঃ সুরেশ তুলসান। সরকারী চাকুরী করেন বিধায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চোখ ফাঁকি দিতে নিজ বোন দিপা রাণী আগরওলার নামে কোটি কোটি টাকার সম্পতি ক্রয় ও মামলা পরিচালনার গুরুত্বর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি নিজ সহদোরের সাথেও চলছে মামলা মোকদ্দমা। দিপা রানী একজন গৃহিনী। বৈবাহিক সুত্রে নাটোর জেলায় স্বামী প্রদিপ কুমার আগরওয়ালার সাথে বসবাস করেন। তার নামে কুষ্টিয়া শহরের হাসপাতাল মোড় এ একটি সাড়ে ৮ কাঠা জমি যার আনুমানিক মূল্য ৪ কোটি টাকা, নির্মানাধীন কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের সামনে ১৬ কাঠা জমি যার আনুমানিক মূল্য দেড় কোটি টাক্,া বাবর আলী গেটের এসবি সড়কের মরহুম এ্যাড. মাহতাব উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান মজনুর নিকট থেকে ৮ কাঠা জমি ক্রয় করা হয়েছে। সম্পত্তি ক্রয় সংক্রান্ত জটিলতায় ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে। এখানে দিপা রানী কখনও বাদী আবার কখনও বিবাদী। দিপা রানির একটি ঘনিষ্ট সুত্রে জানা গেছে ৪ মামলায় দিপা রানির নাম থাকলেও এ সংক্রান্ত বিষয়ে তার সংশ্লিষ্টতা নেই। মামলা চালাচ্ছে জমির মূল মালিক ডাঃ সুরেশ তুলসান। মামলার নথি সুত্রে জানা যায়,
কুষ্টিয়া শহরের হাসপাতাল মোড়ের সাড়ে ৮ কাঠা জমি দিপা রানির নামে ক্রয় করে ডাঃ সুরেশ তুলসান। জমিটির অন্যতম মালিক ইয়াসমিন ইসলামের নামে জাল সলেনামার কারনে মামলা হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। স্পষ্ট হয়ে উঠে মূল মালিক সুরেশ তুলসান। মামলায় দিপা রানি উপস্থিত না থাকলেও হাজিরায় তার নাম ব্যাবহার করে সাক্ষরের অভিযোগ উঠেছে। কুষ্টিয়া জেলা যুগ্ম জজ আদালতে এ মামলার বাদী ইয়াসমিন ইসলাম। তিনি পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত সাড়ে ৪ শতক জমি ফিরে পাওয়ার জন্য সুরেশের বোন দিপা রানির নামে মামলা করেছেন। মামলা নং দেং ৭৮/২০১৩। শহরের বাবর আলী গেট সংলগ্ন এ্যাড.মাহতাব উদ্দিনের বাড়ির ৮ কাঠা জমি তার পুত্র মিজানুর রহমান মজনুর নিকট থেকে দিপা রানি আগরওয়ালার নামে ক্রয় করা হয়েছে বলে দাবী ডাঃ সুরেশ তুলসানের। কথিত বায়নায় জমিটির মূল্য ধরা হয়েছে ৪০ লক্ষ টাকা। অথচ জমিটির প্রকৃত মূল্য কয়েক কোটি টাকা। মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ভাড়ার চুক্তিকে কৌশলে বায়নায় পরিনত করে বাড়িটি দখল করার পায়তারা করছে ডাঃ সুরেশ তুলসান। চার কোটি টাকা দামের জমি মাত্র ৪০ লাখ টাকায় রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে চলেছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে তার বিরুদ্ধে দিপা রানীর নাম ব্যাবহার করে ৩টি দেওয়ানী ফৌজদারী মামলা পরিচালনা করছে ডাঃ সুরেশ তুলসান। যার মামলা নং দেং ৭৮/২০১৩, দেং ২০৮/১৩ কুষ্টিয়া জেলা যুগ্ম জজ আদালত এবং নন জিআর ৩১/২০১৫। তুলসান ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে তার অন্য ভাইদের সাথে বিরোধ বাধলে কুষ্টিয়া পৌরসভা ডাঃ সুরেশের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দেয়। ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে ডাঃ সুরেশ তুলসান মামলা করেছে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে। যার নং দেং ৩/২০০৭ কুষ্টিয়া জেলা যুগ্ম জজ আদালত। এছাড়া তুলসান ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিকানা নিয়ে বিরোধ বাধলে ডাঃ সুরেশ অন্য অংশিদারের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করেছে যার নং দেং ৮/২০০৫। কুষ্টিয়া জেলা যুগ্ম জজ আদালত। তুলসান ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নিয়ে বিরোধে আরো ২টি মামলা জিআর ৩৩/৪ ও জিআর ১৪৫/৫ এর নেপথ্যের নায়ক ডাঃ সুরেশ তুলসান বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। সুরেশ ও তার ভাই বিনোদ কুমারের বিরুদ্ধে তাদের পৈতৃক বাড়ি জাল দান পত্র করার অভিযোগ রয়েছে। শহরের এনএস রোডের ১৬১ নং বাড়ি ১৮.৬২ শতাংশ জমির উপর অবস্থিত যার প্রকৃত মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা। উক্ত জমি ছিলো কিষন লাল আগরওলার। সম্প্রতি এই বাড়িটি নিয়েও শরিকদের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে ডাঃ সুরেশ তুলসান। এ বিষয়ে গত ২৬ এপ্রিল মহেন্দ্র কুমার আগরওয়ালা দিং বাদী হয়ে বিনোদ ও সুরেশের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া পৌর মেয়রের নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগে সুরেশ ও বিনোদ পিতা দেবিদত আগরওয়ালা জীবিত থাকতেই অন্য ৩ ভাই তে ফাঁকি দিয়ে নিজেরা দাদার কিষোন লাল আগরওলার নামে ভুয়া ও জাল দান পত্র তৈরি করে বাড়িটি নিজেদের দখলে নেওয়ার পায়তারা করছে বলে জানা গেছে। আগামী ১ জুন উভয় পক্ষকে প্রমানাদি নিয়ে হাজির হতে নোটিশ দিয়েছেন পৌর মেয়র। এছাড়া উক্ত দান পত্রের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া সদর সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। যার নং ১৯৮/১৩। সুরেশের পিতা দেবিদত আগরওয়ালা বাদী হয়ে নিজ পুত্র বিনোদ কুমার ও ভাই মহন লাল আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা টি দায়ের করেন। যা এখন টক অব দ্যা টাউন। এ সকল বিষয়ে ডাঃ সুরেশ কুমার তুলসানের বক্তব্য জানার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন