বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ২০, ২০১৪

১২ টির লাইসেন্স থাকলেও মেয়াদ উত্তীর্ণ

 দৌলতপুরের ২৪ টি ইটভাটায় অবাধে কাঠ পুড়ছে 

দৌলতপুর সংবাদদাতা : কুষ্টিয়ার দৌলতপুের বৈধ অবৈধ সকল ইটভাটা মালিকরা একাট্টা হয়ে তাদের ইটভাটায় কাঠ পুড়াচ্ছে। উপজেলার ইটভাটা মালিকদের ২৪ টি ইটভাটায় অবৈধভাবে প্রতিদিন বিপুল পরিমান কাঠের খড়ি পুড়ছে। সরকারি নিয়মনীতির কোন রকম তোয়াক্কা না করে এখানকার ইটভাটা মালিকরা স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ইটভাটায় কাঠ পোড়াচ্ছে বলে জানাগেছে। এসকল ইটভাটাগুলো কৃষি জমিতে স্থাপন করার ফলে ব্যাপকহারে কমে গেছে ফসলের উৎপাদন। তাছাড়া ইটভাটা সংলগ্ন অন্যান্য জমির ফসল পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ কৃষক। সরকারি হিসেব অনুযায়ি বর্তমানে দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৪ টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। পরিবেশ আইন অনুসারে দৌলতপুর উপজেলায় ইটভাটা স্থাপনের জন্য কোন জায়গা না থাকলেও ইটভাটা মালিকদের সাথে পরিবেশ কর্মকর্তাদের অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে তারা ১৮ টি ইটভাটা মালিককে অনুমোদন দিয়েছে। এবং এর জ্বালানি হিসেবে কয়লা পোড়ানোর নিয়ম থাকলেও দৌলতপুর উপজেলায় তা কোন ভাবেই মানা হচ্ছেনা। অন্যদিকে সরকারি নির্দেশ মতে ড্রাম চিমনির ব্যবহার অবৈধ ঘোষণা করা হলেও এখানকার ৬ জন ইটভাটা মালিক সরকারের এই নির্দেশ অমান্য করে ড্রাম চিমনি ব্যবহার করছে। ড্রাম চিমনির ব্যবহার নিষিদ্ধ হবার পরও তারা সরকারকে রীতিমত বৃদ্ধাঙ্গুৃলি দেখিয়ে ড্রাম চিমনি দিয়ে ইট পোড়াচ্ছে। খোদ দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের এক কিলোমিটারের মধ্যে ৩ টি ইটভাটায় ড্রাম চিমনির ব্যবহার করা হচ্ছে। দৌলতপুর উপজেলার ২৪ টি ইটভাটার মধ্যে ফিক্সড চিমনি রয়েছে ১৮ টি এবং ড্রাম চিমনি রয়েছে ৬ টি। ফিক্সড চিমনি গুলো উপজেলার স্বরূপপুরে আব্দুস সাত্তার, বজলুর রহমান ও নুরুল ইসলাম। ডাংমড়কায় খন্দকার আবুল কালাম আজাদ, মোহাইমিনুল হক, শাজাহান সিরাজ ও জাহাঙ্গীর আলম। জয়রামপুরে মতিউর রহমান, সোনাইকান্দি জোয়াদ্দার পাড়ায় শহিদুল ইসলাম অলি, রিফাইতপুর গলাকাটিতে নজরুল ইসলাম ,চক দৌলতপুরে আব্দুল হান্নান ও রমজান আলী, মানিক দিয়াড়ে এজাজ আহমেদ মামুন, দৌলতপুর হাসপাতালাতের পার্শ্ববর্তি এলাকায় মনিরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও আব্দুস সালাম, আড়িয়ায় নুরুজ্জামান হাবলু মোল্ল¬া ও খলিশাকুন্ডিতে ফয়সাল মেহেদী হাসান চপল। এদের মধ্যে ১২ জনের ইটভাটার লাইসেন্স এর মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে শেষ হয়ে গেছে। অন্য ৬ জনের কোন লাইসেন্স নেই। অবৈধ ড্রাম চিমনির মধ্যে গলাকাটি
মোড়ের ঝুমুর আলী, ঝাউদিয়ায় ইয়াছিন আলী, দৌলতখালির সুজন আলী, বাজুডাঙ্গায় আমান উল্লাহ , সাদিপুরে ইদবার আলী এবং গোয়ালগ্রামে হাজী আহম্মদ আলী। দৌলতপুর সহ আশেপাশের বনজ সম্পদ উজাড় করে অবশেষে দেশের দক্ষিণ অঞ্চল থেকে প্রতিদিন ট্রাক ট্রাক খড়ি দৌলতপুরের এসব ইটভাটায় মজুদ করে তা পোড়ানো হচ্ছে। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোকতার হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, জেলা প্রশাসনের ছাড়পত্র ব্যতিত যেসব ইটভাটায় অবৈধভাবে ইট প্রস্তুত করার খবর পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারপরও এসকল ইট ভাটাতে শুধুমাত্র কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এদিকে উপজেলা পরিদের মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যে ৭ টি ও দৌলতপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চারপাশে ৫ টি ইটভাটা স্থাপন ও অনুমোদন কিভাবে হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও তার জবাব মেলেনি। অত্যান্ত জনবহুল এলাকায় কিভাবে ঐ ১২ টি ইট ভাটা মালিক কিভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড় পত্র পেয়েছে তা এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের বোধগম্য নয়। জনবহুল এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করার ফলে শিশুসহ সবধরনের মানুষ শ্বাসকষ্ট,হাপানী, যক্ষা,চর্ম সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন