রবিবার, এপ্রিল ১৩, ২০১৪

ছাত্রদলের ধর্মঘটে অচল ইবি ॥ বাস ভাংচুর, আহত ৪ ॥ ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্রদল নেতা আহত


ইবি প্রতিনিধি ॥ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ আটককৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ছাত্রদলের ২দিনের ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিনেই অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহর থেকে শিক্ষার্থী শুন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কয়েকটি বাস পুলিশ প্রহরায় ক্যাম্পাসে আসলেও মাত্র কয়েকটি বিভাগ ছাড়া অধিকাংশ বিভাগেই ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ধর্মঘট সফল করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ টি বাসে ছাত্রদল কর্মীরা ভাংচুর চালিয়েছে। এঘটনায় অন্তত:৪ জন কর্মচারী আহত হয়েছে। এদিকে দুপুরে ইবি ছাত্রদলের অর্থসম্পাদক কামরুল ইসলামকে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা বেধরক পিটিয়ে আহত করেছে বলে জানা গেছে । ক্যাম্পাস সুত্রে জানা গেছে, ইবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম রাশেদ ও তথ্য গবেষনা সম্পাদক মুত্তাকিন রহমানের মুক্তি দাবীতে, সকল নেতাকর্মীর মামলা প্রত্যাহার ও ক্যাম্পাসে সকল রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করাসহ ৫ দফা দাবিতে ইতিপূর্বে চারদফায় ছাত্রদল ধর্মঘট পালন করে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ছাত্রদল সভাপতি ওমর ফারুক শনি ও রোববার দুই দিনের ধর্মঘটের ডাক দেয়। শনিবার সকাল থেকে ধর্মঘট সফল করতে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহর থেকে পুলিশ প্রহরায় ছেড়ে আসা শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসে চোরাগুপ্তা হামলা চালায়। এসময় ঝিনাইদহ শহরে থেকে আসার পথে ভাটইবাজার নামক স্থানে কর্মকর্তাদের বহনকারী দুটি গাড়িতে (কুষ্টিয়া- ঝ-১১-০০০৪ ও কুষ্টিয়া স-১১-০০০২) ভাংচুর চালায়। এছাড়া সকাল ১০টার দিকে কুষ্টিয়া শহর থেকে
কর্মচারীদের বহনকারী আরও দুটি গাড়ি (কুষ্টিয়া-চ-০৮-০০০২ ও কুষ্টিয়া-স-১১-০০০৩) আলামপুর নামক স্থানে এসে পৌছালে ছাত্রদল কর্মীরা গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় অন্তত: ৫টি বাসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ৪টি বাস ব্যাপক ভাংচুরের শিকার হয়। এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালক সালাউদ্দিন, কর্মচারী আব্দুল লতিফ, হালিম ও মফিজুল ইসলাম আহত হয়।  এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ভাত খাওয়ার সময় ইবি ছাত্রদলের অর্থ সম্পাদক কামরুল ইসলামের উপর ছাত্রলীগ কর্মীরা আকস্মিক হামলা চালিয়েছে। ১৫/২০ জন ছাত্রলীগ কর্মী ও চাকরি প্রত্যাশি বহিরাগত উপর্যুপুরি কিল-ঘুষি, লাথি ও চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে তাকে রক্তাক্ত করে। পরে পুলিশ সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে ইবি মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  ইবি ছাত্রদলের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন- ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার আমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে। ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আমাদের পাঁচ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে স্বতস্পূর্ত ভাবে কøাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে। ছাত্রদল নেতাকর্মীরা কোন বাস ভাংচুর করেনি দাবি করে তিনি বলেন যত দিন দাবি আদায় না হবে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন অব্যহত থাকবে।’ এব্যাপারে প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন,‘ মাননীয় উপাচার্যের নির্দেশে ক্যাম্পাস সচল করার লক্ষ্যে করনীয় সবকিছু অব্যহত রয়েছে। বিভিন্ন রুটে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ইবি পরিবার বর্গ যেভাবে সহযোগিতে করেছেন তার জন্য কৃতঙ্গতা প্রকাশ করছি। আশা করছি খুব দ্রুত ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন