বুধবার, জুলাই ২৩, ২০১৪

কুষ্টিয়ায় জমজমাট ঈদের বেচাকেনা দেশী পোশাকের সাথে ইন্ডিয়ান বাহারি নাম

 আব্দুম মুনিব : ঈদের সেই দিনটি যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জমে উঠছে কুষ্টিয়ার ঈদের বাজার। ফুটপাত থেকে বড় বড় বিপণিবিতান সর্বত্র লোকালয়ের একই চেহারা। মাত্র কয়েকদিন পার হলেই ঈদুল ফিতর। ফলে ঈদের আগেই চলছে বেচাকেনা। বরাবরের মতো এবারো ঈদের বাজারে ভারতীয় সব সিরিয়াল ও নামের ছোয়া লেগেছে। ইতোমধ্যে ক্রেতা সামলাতে কুষ্টিয়ার দোকানিরা অতিরিক্ত লোক নিয়োগ দিয়েছেন। বেতন বোনাস পেলে বিক্রি আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার ব্যাবসায়ীরা। এবারের ঈদে মেয়েদের লেহেঙ্গা থেকে শুরু করে ছেলেদের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে কুষ্টিয়ার ঈদ বাজারে। তবে তৈরি পোশাকের দোকান ছাড়াও, ভারতীয় শাড়ি ও থ্রিপিসের প্রতি মানুষের ঝোঁক একটু বেশি। রয়েছে দেশীয় বিভিন্ন পোশাকের কদর। কুষ্টিয়ার ঈদ বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। তবে ঈদ বাজার নিয়ে যেমন খুশির খবর আছে তেমনি আছে ক্ষোভ ও হতাশার খবরও। পোশাকের দাম নিয়ে সাধারণ বা স্বল্প আয়ের মানুষের ক্ষোভের সীমা নেই। বাজেটে কুলিয়ে উঠতে না পেরে অনেকে ফিরে যাচ্ছে খালি হাতে। কুষ্টিয়ার বঙ্গবন্ধু মার্কেট, লাভলী টাওয়ার, রজব আলী মার্কেট, আব্দুল হামিদ মার্কেট, ইব্রাহীম প্লাজা, ইসলামীয়া কলেজ মার্কেট, হাই স্কুল মার্কেট, আগাই ইউসুফ মার্কেটসহ এন এস রোডের বিভিন্ন মার্কেটে ঈদের হরেকরকম পোশাকের বাহারি নাম নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। এছারাও শহরের পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে ফুটপাতসহ বিভিন্ন ফুটপাতে ঈদের বাজার জমে উঠেছে। এবারের ঈদে ভারতীয় সব সিরিয়ালসহ সব হিন্দি সিনেমার ছোয়া লেগেছে মেয়েদের পোশাকে। বাহারী সব নামে বিক্রির হচ্ছে এসব পোশাক এর মধ্যে রয়েছে পাখি, আশীকী, আশীকী-২, জিপসি, ঝিলিক, আনারকলি, রাশি, শাকিরা, রানি মুখার্জী, ঐশ্বরিয়া, দেবদাস, কাজল, কারিনা, ক্যাটরিনাসহ বিভিন্ন নামে। বেচাকেনা বেড়েছে শাড়ির বাজার গুলোতে বাহারি শাড়ি উঠেছে কুষ্টিয়ার ঈদ বাজারে। কুষ্টিয়ার লাভলী টাওয়ারে বুশরা, ফাতেমা ফ্যশান, এনএস রোডে লেডিস ভিউ, তাজমহল, নোভা ফ্যাশন, মায়াবীনি, তৌশি ফ্যাশন, বঙ্গবন্ধু মার্কেটে থ্রীপিচ পয়েন্ট, বসুধা ওয়ান, অঙ্গনা বস্ত্রালয়, বসুন্ধরা থ্রীপিচ, জুই ফ্যাশন, ফ্যাশন বাংলা, বিউটি বস্ত্র বিতান, জনতা বস্ত্রালয়, রুপলাগী, থানা মোড়র টেক্স্রমার্ট, মুহসী, লালন মার্কেটে রংসহ বিভিন্ন দোকানে শোভা পাচ্ছে নানা রকম থ্রীপিচ দাম ৮শ থেকে
১০ হাজারের মধ্যে। এছা[ড়া শহরের লাভলী টাওয়ারে মিরা শাড়ী ঘর, বেনারশি কুঠির, এন এস রোডের দোগাছী শাড়ী, ইনসাফ বস্ত্র বিতান, আনিস শাড়ী ঘরসহ বিভিন্ন দোকানে হরেক রকম শাড়ী শোভা পাচ্ছে দাম ১ হাজার থেকে ১০ হাজারের মধ্য। রয়েছে কম দামী শাড়ীও। এসব দোকানে সূতি, অ্যাপলিক জামদানি, বেনারসি, টাঙ্গাইল সিল্ক থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি বাহারি রকমের শাড়ি আছে। বঙ্গবন্ধু মার্কেটের জুই ফ্যাশনের মালিক মিলটন এ প্রতিবেদককে জানালেন, এবারের ঈদে তাদের বেচাকেনা ইতোমধ্যে জমে উঠেছে। তবে গতবারের থেকে তুলনামূলক কম বেচাকেনা হচ্ছে বলে তিনি জানালেন।  শহরের বঙ্গবন্ধু মার্কেটে এক দম্পতী ছেলে মেয়ে নিয়ে এসেছেন ঈদের বাজার করতে। তারা জানালেন, ২ ছেলে মেয়ের ঈদের পোশাক কেনার জন্য ৫ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলেন। এখন ঈদের পোশাকের দাম আর তাদের পছন্দের মূল্য দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে বিপণিগুলোতেও ক্রেতার কমতি নেই। কিন্তু এরই মধ্যে টেলার্সগুলি অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পরে ক্রেতা সাধারন।  ছেলেদের জন্য শহরের কোর্ট ষ্টেশন রোডে রেডিআস, ১৯৫২, বিত্ত, আ্যথেনটিক, থানা মোড়ের মায়াজাল, টেক্সমার্ট, মুহসি, এনএসরোডের ১৯৭১, রুপছোয়া, ১৯-২০, জেনেসিস, অন্যরকমসহ বিভিন্ন গার্মেন্সেসে বিভিন্ন নামে শোভা পাচ্ছে বাহারি রঙের সব দেশি-বিদেশি পাঞ্জাবি। দাম ৫ শ’ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। রেডিআসের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন জানান, বরাবরের মতো এবারো ছেলেদের ঈদের প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবী। তার দোকানে দেশি বিদেশী পাঞ্জাবী বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া পোশাকের সাথে পাল্লা দিয়ে বেচাকেনা বেড়েছে জুতা সেন্ডেলের দোকানে বিপনী বিতান, এন এস রোডের বড় দোকানের সাথে বিক্রির বেড়েছে অস্থায়ী ভাবে গড়ে উঠা বিভিন্ন জুতা সেন্ডেলের দোকানে। শহরের বড় মসজিদ মার্কেটে স্টেপ ফুট ওয়ার, থানা মোড়ের সু প্যালেস, পায়ে পায়ে, সু ফ্যাশন, বাটা, এ্যাপেক্স, পদার্পন গার্লস স্কুলের পাশে অবস্থিত বিভিন্ন দোকানে বেচাকেনা বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যাবসায়ীরা। তবে কিছুটা ভিন্নমত ক্রেতাদের। তাদের বক্তব্য গত ঈদের তুলনায় এ বছর সব কিছুর দাম অনেক বেশি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন