মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৩

নদী তীর সংরক্ষণে প্রস্তাবিত প্রকল্প দুই বছর ফাইলবন্দি : মেহেদী রুমীর উদ্বেগ

কুমারখালীতে পদ্মার ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে কবিগুরুর স্মৃতিধন্য শিলাইদহ কুঠিবাড়ী

ষ্টাফ রিপোর্টার : কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা। ভাঙ্গনের ফলে উপজেলার ছয়টি
গ্রামের কয়েক হাজার একর ফসলী জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘর-বাড়িসহ বিভিন্ন ইমারত ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে পদ্মা তীরবর্তী শিলাইদহ পল্লীতে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য কুঠিবাড়িটিও। ভাঙ্গন রোধে নদী তীর সংরক্ষণে প্রস্তাবিত একটি প্রকল্প দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে মন্ত্রণালয়ে ফাইলবন্দী থাকায় এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের অভাবে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পদ্মা নদী তীরবর্তী কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া, কালোয়া, শ্রিকোল, কান্দাবাড়ি, সুলতানপুর ও শিলাইদহ গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকা পদ্মার ব্যাপক ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। নদী ভাঙ্গনের কারণে বিগত কয়েক বছরে আবাদী জমি ও ঘরবাড়ি হারিয়ে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। প্রতিবছরই ২০-২৫ মিটার ভেঙ্গে জনপদের দিকে এগিয়ে আসছে নদী। এ বছরও ভাঙ্গনের তীব্রতা অব্যাহত থাকায় গত এক সপ্তাহের মধ্যে নদী তীর সংলগ্ন সুলতানপুর ও বেড় কালোয়া গ্রামের ৪০-৫০টি বাড়িঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে পদ্মার ব্যাপক ভাঙ্গন ও নদীর পরিবর্তীত গতিপথ বিশ্লেষণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, ভাঙ্গন রোধে সত্বর নদী তীর সংরক্ষণ করা না গেলে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটিও পদ্মার ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যেতে পারে। পদ্মার তীর থেকে শিলাইদহের কুঠিবাড়ি মাত্র ৪০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে বলে জানান পাউবোর কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১ অক্টোবর পানি সম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন কুমারখালি উপজেলার শিলাইদহে এসে নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং নদীর ভাঙ্গন থেকে কুঠিবাড়ি রক্ষায় সত্বর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর নির্দেশের প্রেক্ষিতে পরে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পেশ করেন। পরবর্তীতে টেকনিক্যাল কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ভাঙ্গন রোধে নদী তীর সংরক্ষণে ডিজাইন তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর দুই বছর পরও প্রকল্পটি আলোরমুখ দেখেনি। কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার জানান, নদী ভাঙ্গন থেকে কুঠিবাড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকা রক্ষায় সুলতানপুর থেকে শিলাইদহ ঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণের জন্য ২০১১ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে ১৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু আজও সেটি অনুমোদন হয়নি। এদিকে কুমারখালী খোকসা আসনের সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী ভাঙ্গন রোধে নদী তীর সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দসহ জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন