মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৩

‘ডুবন্ত নৌকায় কেউ উঠবে না’

এই সরকারের হাতে শুধু রক্ত আর রক্ত : খালেদা জিয়া

ঢাকা অফিস : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বতর্মান সরকারের দুঃশাসনে মানুষ অতিষ্ঠ। এই সরকারের হাতে শুধু রক্ত আর রক্ত। সোমবার রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে এক জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। বিরোধী দলের নেতা বলেন, দেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্র বানাতে সরকার ক্ষমতায় বসেছে। তাঁরা নতুনদের ঘুম পাড়িয়ে রাখতে চায়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নয়। স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। দেশ ও জনগণের শত্রু। খালেদা জিয়া বলেন, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট করে সরকার জনগণের টাকা পকেটে ভরেছে। ব্যাংকের টাকা নিয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো খেলাপী ঋণের জালে আটকে আছে। ত
িনি বলেন, এই সরকার কথায় কথায় আইন করে।সাংবাদিক সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকান্ডের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, সাংবাদিকদের নির্যাতন ও হত্যা করা হচ্ছে। সাগর-রুনির কাছে সরকারের দুর্নীতির গোপন তথ্য ছিল। তাঁরা তা প্রচার করতে চেয়েছিল। সেকারণেই তাঁদেরকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের বাড়ি থেকে কিছুই চুরি হয়নি। শুধু ল্যাপটপ আর সিডি চুরি হলো। কারণ তার মধ্যেই ছিল গোপন তথ্য। তিনি বলেন, সরকারের হাতে শুধু রক্ত আর রক্ত। পিলখানার বিদ্রোহীদের সরকার প্রশ্রয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, হেফাজতের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে তাঁরা গুলি চালিয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘ওইদিন যদি অবস্থানকারীদের বের করেই দেওয়া হয় তাহলে মাইকিং কেন করলেন না? রাস্তার আলো নেভালেন কেন? কেন ইসলামিক
টিভি বন্ধ করলেন?’ সীমান্তে হত্যা প্রসঙ্গে বিএনপির নেতা বলেন, সীমান্তে ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে ঝুলেছে। তারপরেও খুনিরা খালাস পেয়ে গেল। সীমান্তে পাখির মতো মানুষ হত্যার বিচার হয় না। খালেদা বলেন, নৌকার তলা ফুটো হয়ে গেছে। ডুবন্ত নৌকায় কেউ উঠবে না। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সরকারের বয়স আর মাত্র তিন মাস। আপনারা সরকারের অন্যায় আদেশ মানবেন না। দেশের কল্যাণে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না।’ তিনি বলেন, ‘সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতেই হবে, নিতেই হবে, নিতেই হবে।’ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তো তাঁদের। এই দাবিতে তখন বহু মানুষ হত্যা করেছিলেন। লগিবৈঠার আন্দোলন করেছিলেন। আজ দেশের প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দরকার। ৯০ ভাগ মানুষ যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় তখন কেন দেবেন না? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবে তা নিয়ে সংসদে আলোচনা করুন।’ তিনি বলেন, কোনোভাবেই হাসিনার অধীনে নির্বাচন হতে পারে না। হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। সিলেটে সিপিবির সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘গুন্ডা বাহিনী সামাল দেন।’ খালেদা জিয়া ‘দেশরক্ষার জন্য’ ছোট-বড়, সাবেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশরক্ষার জন্য আন্দোলন করতে হবে। রংপুরের লোক আন্দোলনে সাড়া দিতে রাজি আছে। রাজশাহীবাসীর উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা রাজি আছেন? এ সময় জনগণ তাঁকে সমর্থন জানায়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে হয়রানি বন্ধ করার জন্য সরকারি দলের প্রতি আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। বক্তব্যের শেষপর্যায়ে এসে খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতায় এসে আলোকিত বাংলাদেশ গড়বেন। নতুন ধরনের সরকার নিয়ে আসব। সন্ত্রাস দূর করব। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, যদি বিএনএফকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে দেশের মানুষ আপনাদের ছাড়বে না।উলে¬খযোগ্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধাদলের সভাপতি, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন।এদিকে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধাদলের সভাপতি, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের নেতৃত্বে জনসভা শুরু পূর্বে শত শত নেতা-কর্মী জনসভা স্থলে যোগদেন। এসময় রাজশাহীর জনসভাস্থলের নেতা-কর্মী ও কেন্দ্রীয় বিএনপিরসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা করতালীর মাধ্যমে স্বাগত জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন