বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৩

ভেড়ামারায় এক গৃহপরিচারিকার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার : গহনা চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কুষ্টিয়ায় এক গৃহপরিচারিকার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তার সারা শরীরে ব্যাট দিয়ে পেটানো হয়েছে, ভেঙে ফেলা হয়েছে একটি হাত, প্লাস দিয়ে থ্যাঁতলে দেয়া হয়েছে পায়ের আঙ্গুল ও নখ। অসহায় ওই নারী হাসপাতালের বিছানায় নির্যাতনের অসম্ভব যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। এই জঘন্য মানবতা বিরোধী অপকর্মটি করেছেন সরকার দলীয় স্থানীয় প্রভাবশালী এক ইউপি চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় থানায় মামলা দেয়া হলেও ওই চেয়ারম্যানের চাপে তা নথিভুক্ত করা হয়নি। জানা যায়, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের পরানখালী গ্রামের ওয়াহেদ তহশিলদারের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন একই এলাকার আব্দুল হামিদের স্ত্রী রানু খাতুন (২৫)। গত ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে মিথ্যা গহনা চুরির অভিযোগ তুলে রানুকে প্রথমে বেধড়ক মারধোর করে ওই বাড়ির লোকজন। পরে ওয়াহেদ তহশিলদারের ভাতিজা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলীর কাছে সোপর্দ করে রানুকে। এর পর চেয়ারম্যান ও তার ক্যাডাররা রানুর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। তার সারা শরীরে ব্যাট দিয়ে পেটায় এতে বাম হাত ভেঙে যায়। এছাড়া পায়ার্স দিয়ে তার পায়ের আঙ্গুল, নখ থ্যাঁতলে দেয়। অনেক হাতে পায়ে পড়েও রানু এ পৈশাচিক নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। চেয়ারম্যান শওকত আলী আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে কেউ উচ্চ বাচ্চ করার সাহস পায়নি।
রানুর স্বামী আব্দুল হামিদ জানান, স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় হাসপতালে রানুর চিকিৎসা চলছে। তিনি জানান, চেয়ারম্যানের অব্যাহত হুমকির মুখে এ নির্যাতনের ঘটনা তিনি কাউকে বলার সাহস পাননি। তিনি থানায় একটি এজাহার দিলেও পুলিশ তা নথিভুক্ত করেনি বলে অভিযোগ করেন। রানুর প্রতিবেশি ছলিম শেখ জানান, চেয়ারম্যান শওকত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় এক আওয়ামী লীগ নেতার আশির্বাদ পুষ্ঠ। তাই তিনি এতো বড় একটি ঘটনা ঘটানোর পরও কেউ উচ্চ বাচ্চ করার সাহস পাননি।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, যে ভাবে বলা হচ্ছে, ঘটনাটি তত বড় নয়। তার দাবি প্রতিপক্ষ গ্র“প সুবিধা নিতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। তিনি এ ঘটনায় সংবাদ না প্রকাশ করে তার কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়ারও প্রস্তাব দেন।
ভেড়ামারা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘আরে ভাই ভুলতো মানষ মাত্রই করে। চেয়ারম্যান না হয় একটা ভুল করেই ফেলেছেন। উনার সাথে বসে বিষয়টি ঠিক করে নিন। এ নিউজ করা দরকার নেই। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তকর্তা জানান, চেয়ারম্যানের পক্ষে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা রয়েছেন। তাই এ নিয়ে কিছু বলতে চাইনা। এ নিয়ে মুখ খুললে হয় চাকরী খুয়াতে হবে অথবা বান্দরবনে বদলি হতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন