শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৩

তারেক রহমান ও গ্রামমুখী রাজনীতি

ড. এ কে এম মতিনুর রহমান :
তারেক রহমান! একটি নাম! একটি অস্তিত্ব! একজন মানুষ! ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর যার উপর সরাসরি প্রভাব পড়েছে দু’জন মানুষের, তাঁরা হলেন যথাক্রমে তারেক রহমানের পিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, জেড ফোর্সের সেক্টর কমান্ডার, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং তাঁর মা, যিনি রাজনীতিতে আপসহীন নেত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরপর তিনবার সফল প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া। উত্তরাধিকার সূত্রে তাঁর রক্তে বহমান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চেতনা। পরবর্তীতে তাঁর মা সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কর্মজীবনের প্রভাব তাঁকে রাজনীতিতে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর অভিজ্ঞতায় এই সমৃদ্ধতা একটা অনন্য সংযোজন। পাশাপাশি রয়েছে তাঁর নিজস্বতা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ধারায়। তাঁর কর্মপরিকল্পনা , কর্মপরিক্রমা এবং বাস্তবায়নের ধারায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্পৃক্ত রয়েছে এদেশের আপামর জনসাধারণ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম। তাঁর গতিশীল রাজনীতি এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে রাজনৈতিক কর্মী, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবী তথা সুশীল সমাজ। তারেক
রহমানের কর্মস্পৃহা হচ্ছে ‘একটি উদ্যোগ, একটু চেষ্টা এনে দিবে স্বচ্ছলতা, দেশে আসবে স্বনির্ভরতা’। তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন ও চেতনাকে উজ্জীবিত রাখার তাগিদে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাঁর পরিকল্পনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল-বৃক্ষরোপন, কৃষিক্ষেত্রে মানুষকে স্বাবলম্বী করার প্রত্যয়ে ছাগল পালন প্রকল্প, ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প, দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এছাড়া রাজনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, জাতীয়তাবাদী দলের সকল সংগঠনের দিক নির্দেশনা, বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারায় তাঁর প্রতিটি কর্মের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা মানুষের মাঝে তাঁকে করে তোলে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো। তারেক রহমানের কর্মপরিকল্পনায় তাঁর পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে। শুধু তাই নয়, তারেক রহমানের চেহারায়ও লক্ষ্য করা যায় এ যেন আর এক অন্যরূপে জিয়া নতুনভাবে বাংলাদেশের মানুষের সামনে উপস্থাপিত হয়েছে। তাঁর কথা-বার্তায়, চলা-ফেরায়, বাচন-ভঙ্গী, কাজ-কর্ম সবকিছুতেই যেন শহীদ জিয়ার প্রতিধ্বনি। তারেক রহমান শুধু জিয়াউর রহমানের ছেলে হিসেবেই আবির্ভূতই হননি; বরং জিয়াউর রহমান যেমন গণমানুষের রাজনীতি এবং উন্নয়নের ধারায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন ঠিক তেমনি তারেক রহমানও বুঝতে পেরেছিলেন গ্রামমুখী উন্নয়ন ব্যতিরেকে একটি দেশকে কখনও আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয়। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি উন্নয়ন এবং নেতৃত্বকে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করেন এবং সফলভাবে তা গণমানুষের মধ্যে বিস্তার ঘটাতে সক্ষম হন। তারেক রহমান যখন দেশে উন্নয়নের গতিশীলতা আনয়নে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন, ঠিক তখনই দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক একটি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করে। যে কোন মূল্যেই হোক তারেক রহমানকে প্রতিহত করতে হবে। তারই পদক্ষেপ হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে একটার পর একটা মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁকে জনগণের সামনে হেয় পতিপন্ন করার কাজে লিপ্ত থেকেছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে, দেশপ্রেমিক, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী কোন ব্যক্তিত্বকে সাময়িকভাবে প্রতিহত করা গেলেও চূড়ান্তভাবে কাউকে চিরদিনের জন্য গণমানুষের কাছ থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয়। তারেক রহমান আপনি এগিয়ে যান দৃঢ় চিত্তে। এ দেশের মানুষ শত শৃঙ্খল ভেঙে আপনাকে মুক্ত করে একদিন মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করবেই ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষ যেন তারেক রহমানের মধ্যে অন্য এক জিয়াউর রহমানকে খুঁজে ফিরে। বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শহীদ জিয়ার মতো সৎ, যোগ্য, নিষ্ঠাবান দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়কের। রাজনীতিকরা বর্তমানকেই মূখ্যজ্ঞান করে বর্তমানেই বসবাস করতে চান। রাষ্ট্রনায়ক কিন্তু বর্তমানে বসবাস করেও অতীতকে ভোলেন না এবং ভবিষ্যতকে সামনে রেখে পথ রচনা করেন। রাজনীতিকরা রাজনৈতিক দলকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন, রাষ্ট্রনায়ক কিন্তু রাজনৈতিক দলকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে দলের উর্ধ্বে যে জাতি ও জনগণ তাদের প্রতিই হন অধিক আকৃষ্ট। ভবিষ্যতে তারেক রহমান বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের গণমানুষের জন্য এমনটিই করবেন এ প্রত্যাশা সবার।
(অধ্যাপক, রাষ্ট্রনীতি ও লোক প্রশাসন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।)



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন