শুক্রবার, মার্চ ২১, ২০১৪

প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদে

 ইবি মাস্টার্সের ছাত্রকে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মারধোর

ইবি প্রতিনিধি ॥ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদে মিজানুর রহমান নামে ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের এক ছাত্রকে মারধোর করেছে বহিরাগত (জাসদ) ছাত্রলীগ ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। বহিরাগতদের হাত থেকে বাঁচতে মিজানুর রহমান দৌড়ে পালিয়ে ইবি থানায় আশ্রয় নেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। প্রতক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বহিরাগত কিছু ছাত্রলীগ নমাধারী সন্ত্রাসীরা জাসদ ছাত্রলীগের নেতার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত মো. মিজানুর রহমান নামে এক ছাত্রের বন্ধুর বোনকে প্রায়ই উত্যক্ত করতো। ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্ত্বরে মিজানুর রহমানের সাথে বহিরাগত ক্যাডার ও বিশ্ববিদ্যালয় জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সাইফুজ্জামান পটলার সমর্থক বসির, বিপ্লব, সনাতন ও মামুনের কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বহিরাগত ক্যাডাররা মিজানুর রহমানকে মারধোর শুরু করে। পরে মিজানুর রহমান সেখান থেকে প্রাণ রক্ষার্থে দৌড়ে পালিয়ে যান এবং বিশ্ববিদ্যালয় থানায় আশ্রয় নেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসময় বহিরাগত ক্যাডাররা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিজানুর রহমানকে ধাওয়া করতে থাকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে নিরাপদে থানা থেকে বের করে আনা হয়। মিজানুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী রেজিষ্ট্রার মনসুর রহমানের ছেলে ও বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসির ক্যাডেট সার্জেন্ট। মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া আমার এক বন্ধুর বোনকে বহিরাগত কিছু ক্যাডার নিয়মিত উত্যক্ত করতো। আমি তাদেরকে এ ব্যাপারে বলতে গিয়েছিলাম। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে আমার উপর চড়াও হয় এবং ছুরি, চাকু নিয়ে আমাকে ধাওয়া করে।’

এদিকে মিজানুর রহমানকে মারধোরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সাইফুজ্জামান পটলা সমর্থক বহিরাগতদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ পরস্পরের দিকে তেড়ে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে হঠিয়ে দেয়। এসময় জাসদ ছত্রলীগ নেতা সাইফুজ্জামান পটলা পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে এবং কয়েকজন পুলিশ সদস্যদের লাঞ্ছিত করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান ও ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি )মীর শরিফুল জনক হক ঘটনাস্থলে এসে পৌছালে তাদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জানা যায়, মিজানুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতা রাসেল জোয়ার্দ্দার ও ইলিয়াস জোয়ার্দ্দারের বন্ধু। ঘটনার ব্যাপারে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক পুলিশ সদস্যদের লাঞ্ছনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করলে সাইফুজ্জামান পটলা কয়েকজন পুলিশ সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করে।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বহিরাগতদের সাথে ছাত্রলীগের একটু সমস্যা হয়েছিল। পরে তাক্ষণিকভাবে তা মীমাংসা করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনার যেন পূণরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন