শনিবার, নভেম্বর ২৯, ২০১৪

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চুরি করে ধান কাটতে গিয়ে আটক

স্টাফ রিপোর্টার : আদালতের নির্দেশ অমান্য করে গোপনে দান কাটতে গিয়ে স্থানীয় জনগণ ও পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন কুষ্টিয়ার ইবি থানার উজান গ্রামের আজিজল খা। গত বৃহস্পতিবার ভোরে উজান গ্রামের মৃত বদর উদ্দিন খার পুত্র আজিজল খার নেতৃত্বে প্রায় ১০/১২ জন ব্যক্তি একই গ্রামের মৃত কোরবান মিয়ার পুত্র শহিদুল ইসলাম মিয়ার পৈতৃক সম্পত্তিতে চুরি করে ধান কাটতে থাকলে স্থানীয় জনগণ টের পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে ইবি থানার এসআই এমদাদসহ একদল পুলিশ এসে ধানসহ আটক করে। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ভোরে উজান গ্রামের মৃত বদর উদ্দিন খার পুত্র আজিজল খার নেতৃত্বে প্রায় ১০/১২ জন ব্যক্তি একই গ্রামের মৃত কোরবান মিয়ার পুত্র শহিদুল ইসলাম মিয়ার পৈতৃক সম্পত্তিতে চুরি করে ধান কাটতে থাকলে স্থানীয় জনগণ টের পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে ইবি থানার এসআই এমদাদসহ একদল পুলিশ এসে ধানসহ আটক করে। আজিজল খার নেতৃত্বে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন মজিবর খার পুত্র ফারুক খা, উজ্জ্বল খা, দাউদ খার পুত্র রনি খা, বাপ্পী খা, মৃত মিলন চৌধুরীর পুত্র আফজাল চৌধুরী, মৃত আমির চৌধুরীর পুত্র ফিরোজ চৌধুরী, আফজাল চৌধুরীর পুত্র সম্রাট চৌধুরী, ফজলু চৌধুরীর পুত্র জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও আলম চৌধুরী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজিজল খা জোরপূর্বক শহিদুল ইসলাম মিয়ার পৈতৃক সম্পত্তি দখল করতে গেলে পৈতৃক সম্পত্তি রক্ষার্থে অসহায় শহিদুল ইসলাম মিয়া বাদী হয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৬৯/২০১৪। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনারকলি মাহবুব এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায়
রাখার স্বার্থে ১৪৪ ধারায় থানাকে নির্দেশ দেন। থানা উভয়কে জমির ওপর না যাওয়ার নির্দেশ দেন। বাদী পক্ষ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক চললেও বিবাদী আজিজল খা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ২৭/১১/২০১৪ তারিখে চুরি করে বাদী পক্ষের লাগানো ধান কাটতে গেলে ইবি থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে সরেজমিনে এসে ধান আটক করে উজান গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে জমা দেন। পুলিশ জানায়, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আটককৃত ধান ইউনিয়ন পরিষদে জমা থাকবে। এ ব্যাপারে উজান গ্রাম ইউপির ১নং ওয়ার্ড জনপ্রতিনিধি আবদুল জবক্ষার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ আজিজল খার লোকজনের কাছ থেকে ধান আটক করে ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে বুঝিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনা জানার পর বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়বারের মতো শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইবি থানাকে। ইবি থানার ওসি মহিবুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা ঘটনার জানার পর পরই সরেজমিনে দ্রুত ফোর্স পাঠাই এবং কর্তনকৃত ধান জব্দ করি। মামলার বিবাদী আজিজল খা কেন আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে তার সপক্ষে কোনো যুক্তি দাঁড় করাতে পারেনি। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে। তবে আমরা সেখানে বর্তমানে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখেছি।
বাদী শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার পৈতৃক সম্পত্তি তিন পুরুষ ধারাবাহিকভাবে ভোগ দখলে খেয়ে আসছি। জমির সিএস, আরএস, এস এ তিনটি রেকর্ডই আমাদের নামে। তাছাড়া আমরা নিয়মিত খাজনা-ট্যাক্স পরিশোধ করে আসছি। স্থানীয় শক্তিবলে আজিজল খা বিভিন্ন সময়ে জোরপূর্বক জমি দখল করতে যায়। আমার নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আর এস ধরে মামলা করি। মামলা নং ১৬৯/২০১৪। আদালত শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য উভয় পক্ষকে জমির ওপর যেতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। আমি আদালতের নির্দেশ পালন করেছি। আজিজল খা আদালতের নির্দেশ অমান্য করে গোপনে ধান কাটতে গেলে পুলিশ তাদের কাছ থেকে ধান আটক করে। এ ব্যাপারে বিবাদী আজিজল খান ধান কাটার সপক্ষে কোনো যুক্তি দিতে পারেনি। তার জমির কোনো কাগজও নেই, খাজনা-ট্যাক্স কিছুই দেয় না।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শহিদুল ইসলাম গং ও আজিজল খা গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন মামলা চলে আসছে। শহিদুল ইসলাম গং নালিশি পৈতৃক সম্পত্তি বংশপরম্পরায় ভোগদখল করে আসছে। আজিজল খা গ্রাম্য শক্তি বলে আইন উপেক্ষা করে বার বার জমি দখল নিতে যায়। কিন্তু জমির কোনো কাগজপত্র তার নেই। সে আমার বংশেরও কেউ না। এবার তিনি সরাসরি আদালতের নির্দেশ অমান্য করে। এলাকাবাসী জানায়, আজিজল খা একজন বহুরূপী মানুষ। এক সময়ের ব্ল্যাকার, খুনী আজিজল খার অপকর্মে স্থানীয় জনগণ অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন