বুধবার, নভেম্বর ২৬, ২০১৪

ইবিতে ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগের কান্ড

র‌্যাগিংয়ের নামে ভর্তিচ্ছুদের মানসিক নির্যাতন

ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে র‌্যাগিংয়ের নামে ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠেছে। ভর্তি পরীক্ষা শুরু দিন থেকেই ভর্তিচ্ছুদের কম বেশী র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠলেও ক্রমেই তা সীমা অতিক্রম করছে বলে জানা গেছে। র‌্যাগাররা ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ প্রার্থী মিজুর কর্মী বলে অভিযোগ
প্রতক্ষ্যদর্শী সুত্র জানায়, মঙ্গলবারও ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরে বসে ছাত্রলীগ কর্মী ইমাদুল হক সোহাগের নেতৃত্বে ৮/১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী ভর্তিচ্ছু একাধিক ছাত্র ও ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের নামে মানসিক নির্যাতন করতে দেখা গেছে। গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা ছাত্রলীগ কর্মী ইমাদুল হক সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। সে ইবি শাখা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য বলে জানা গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে শিক্ষকদের উপর হামলা, মারধর, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন এবং ভর্তি জালিয়াত চক্রের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্যাক্ষদশী ও ভূক্তভোগী শিক্ষাথীরা জানায়, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগের নেতৃত্বে ৮/১০ জনের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসের ডায়না চত্বরে বসে ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের ডেকে র‌্যাগ দেয়। এসময় সোহাগ একজন ভর্তিচ্ছু ছাত্রের হাতে জোর পূর্বক একটি ফুল ধরিয়ে দিয়ে ভর্তিচ্ছু এক ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে বাধ্য করে। অপ্রত্যাশিত এ ঘটনায় হতবিহবল হয়ে ওই ছাত্রী এঘটনার প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাঁর ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা চালায়। এসময় ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে ছাত্রলীগ কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভূক্তভোগী ওই ভর্তিচ্ছু ছাত্রী বলেন, যারা আমার সাথে অশালিন আচরণ করেছে তাদের কারো পরিচয় আমি জানি না। জীবনে প্রথম বারের ন্যায় আমি ইবি ক্যাম্পাসে এসেছি। প্রথম দিনই এধরণের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে আমি মর্মাহত।
সোহাগ ছাড়াও আরো একাধিক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে র‌্যাগিংয়ের নামে শিক্ষার্থীদেরকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলী মর্তুজা খসরু এর ভাতিজা, ইবির আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ফয়সাল সিদ্দিকি আরাফাত, বিপুল, বিপ্লব, রিয়ন, তুসার, খাইরুল ইসলাম পলাশ, অনিক এরা সবসময় ওই জায়গা গুলোতে বিড়ি, সিগারেট ও গাজার আসর বসায়। আর এসময় তারা আড্ডার ছলে বখাটেদের মত রাস্তায় ও ওই জায়গা গুলোতে ভর্তিচ্ছু ছেলে ও মেয়েরা আসলেই তাদের র‌্যাগ দিয়ে বিভিন্নভাবে হেনস্থা ও নির্যাতন করছে।এবিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. টি এম লোকমান হাকিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের নামে মানসিক নির্যাতন সম্পুন্ন নিষিদ্ধ। যদি কেউ এধরণের গহিত কাজের সাথে জড়িত থাকে তা হলে অভিযোগের ভিত্তিতে অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে তার কাছে কোন ভূক্তভোগী ভর্তিচ্ছু অভিযোগ করেনি বলে তিনি দাবি করেন।
ছাত্রলীগ কর্মী ইমদাদুল হক সোহাগ বলেন, “আমি ক্যাম্পাসেই যাইনি আর আমার বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ ছাড়ানো হচ্ছে।”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন