সোমবার, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০১৩

কুষ্টিয়ায় জিকের অধীনে শাখা খাল খনন ও দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেই

কুদরতে খোদা সবুজ : এক সময় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা সেচ প্রকল্পের অধীনে কয়েক লাখ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া হতো। সেচের মাধ্যমে কুষ্টিয়াসহ ৫টি জেলার চাষীরা বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ করতো। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতার কারণে জিকের অধীনে বিভিন্ন ছোট বড় ক্যানেলের খনন কাজ না করায় ভরাট হয়ে গেছে ক্যানেলগুলো। পানি চলাচল না করায় অবৈধ দখলদারদের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ক্যানেলগুলো। ফলে পানির অভাবে থমকে গেছে চাষীদের মাঠের বোরো চাষ। জানা যায়, ১৯৬৯ সালে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুড়া ও যশোর জেলার ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়ার জন্য সরকার ১৯৫৪ সালে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর ১ কিলোমিটার ভাটিতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা জিকে সেচ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। ১ হাজার ৬শ' ৬৫ কিলোমিটার সেচ খাল দিয়ে বছরে দু'বার সেচ সুবিধা দিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার কৃষককে সেচ সুবিধা দেয়া হতো। সে সময় জিকের ক্যানেলে প্রায় সময়ই পানি থাকতো। মানুষ গোসল করা থেকে শুরু করে সকল কাজে ব্যবহার করতো। কিন্তু পানি আগ্রাসনের কারণে একদিকে ভারতের ফারাক্কা পানিচুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে জিকের খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা সেচ প্রকল্প হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। সেচ প্রকল্পের অধীনে ১ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দিতে পারছে না। প্রকল্পের ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান সেচ খান ও ১ হাজার ৪শ' ৬২ কিলোমিটার শাখা খাল পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। পানির অভাবে থমকে গেছে চাষীদের বিভিন্ন ফসলের আবাদ।
জেলার ত্রিমোহনী, বারখানাসহ বিভিন্ন শাখা খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় ও অবৈধ দখলদাররা সেখানে অবেধভাবে মার্কেট করায় অনিশ্চয়তার মুখে জিকে সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম। তবে এলাকার লোকজন নিজেদের সম্পত্তি অযোক্তিক দাবি করে অনেকেই খাল ভরাট করে বাড়িঘর, মার্কেট তৈরি করেছে। এতে পানি সরবরাহের পথ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে ফেললেও জিকে কর্তৃপক্ষ রয়েছে নিরব। অবৈধ দখলদারদের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ফসলের আবাদ। অনাবাদি থাকছে হাজার হাজার হেক্টর জমি। খালগুলো আর আগের অবস্থায় নেই। ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষি আবাদসহ পরিবশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ক্যানেল ভরাট হয়ে যাওয়ায় গোসল করতে পারছে না মানুষ। পানিশূন্য হয়ে পড়ায় বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছে কুষ্টিয়ার জিকে খাল সংলগ্ন মানুষ। তাই পানির জন্য খাল খননের দাবি কুষ্টিয়াবাসীর। জিকের প্রধান খালসহ শাখাখালগুলো খনন না করায় সঠিকভাবে পানি পাচ্ছে না জিকের অধীনে চাষীরা। ফলে অনাবাদী থাকছে হাজার হাজার একর জমি। কুষ্টিয়াসহ ৫ জেলার লাখ লাখ কৃষকের জীবন, জীবিকাসহ ৫ কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন