মঙ্গলবার, অক্টোবর ০১, ২০১৩

কুষ্টিয়ায় পেপসোডেন্ট-প্রথম আলো জাতীয় স্কুল বির্তক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোর চারটা পর্যন্ত যুক্তি খুজে বেড়িয়েছে কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী তাসনুবা মেহনাজ। সে চেয়েছিল তার যুক্তিটা সেরা হোক। সকালে পেটে তেমন দানাপানিও পড়েনি। সকাল নয়টায় চলে এসেছে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের মিলনায়তনে। সেখানে পেপসোডেন্ট-প্রথম আলো জাতীয় স্কুল বিতর্ক উৎসবে অংশ নেয়। ইচ্ছে ছিল অনেক কিছু করবে সে। তার দল প্রথম পর্বেই বিদায় নেয়। কিন্তু সে বিদায় নেয় না। সবোর্চ্চ নম্বর পেয়ে সে সেরা বির্তাকিক হয়েছে। দলকে এগিয়ে নিতে না পারলেও সে এগিয়ে যাবার লড়াইয়ে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। তাসনুবা মেহনাজ জানান, এই প্রথম তিনি কোন বির্তক প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন। যুক্তিতে মুক্তি এই প্রতিপাদ্য নিয়ে গতকাল সোমবার কুষ্টিয়া থেকে শুরু হয়েছে দেশব্যাপী পেপসোডেন্ট-প্রথম আলো জাতীয় স্কুল বিতর্ক উৎসব-২০১৩। সকাল নয়টার কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের মিলনায়তনে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য ড. শাহিনুর রহমান উৎসবের উদ্বোধন করেন। প্রথম আলোর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি তৌহিদী হাসানের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিভা রাণী পাঠক, গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। এছাড় অংশ নেয়া স্কুলের একজন করে শিক্ষক প্রতিনিধি ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা মিলনায়তনে বির্তক উৎসবে দর্শক সারিতে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য ড. শাহিনুর রহমান তার বক্তেব্য খুদে বির্তাকিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমরা এই বির্তকের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চলে যাবে। এবং জ্ঞানের দিকে শানিত হবে। যুক্ত দিয়ে ভালোর দিকে সর্মথন দিয়ে যাবে।’ কুষ্টিযা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিভা রাণী পাঠক বলেন, যুক্তি দিয়ে বোঝালে ভাল কিছু করা সম্ভব হয়। গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, যুক্ত দিয়ে তোমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যুক্তি দিয়ে আমরা সব কিছু জয় করবো। কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের বিতার্কিক মুজতবা আকিব বলেন, বির্তক করে এখন বিবেচনা করার ক্ষমতা বেড়েছে। কুষ্টিয়া অঞ্চলের লড়াইয়ে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলার দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩০ জন খুদে বিতার্কিক অংশ নেয়। অংশ নেয়া স্কুলগুলো হল, কুমারখালি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমলা সদরপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, ষোলদাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভেড়ামারা, পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ কুষ্টিয়া, মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুমারখালি এমএন পাইলট হাই স্কুল ও মোড়াগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোকসা।
প্রথম পর্ব শুরু হবার সঙ্গে বৃষ্টি হয়ে যায়। বৃষ্টির গতি বাড়ার সাথে বেড়ে যাবাই যুক্তির লড়াই। একেএকে কোর্য়াটার, সেমিফাইনাল বির্তকে অংশ নেয় বির্তাকিকরা। সবাইকে পেছনে ফেলে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল ও কুমারখালি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফাইনালে অংশ নেয়। ‘বাবা মায়ের অবহেলার কারণেই শিশুরা বিপদগামী হয়’ যুক্তির লড়াইয়ে পক্ষ অবস্থানে থেকে কুমারখালি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিজয়ী হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের শিক্ষক রেজাউল করিমের হাতে ভ্যানু স্বারক তুলে দেন। এরপর সেরা বির্তাকিক কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তাসনুবা মেহনাজকে ক্রেষ্ট দেয়া হয়। রানার আপ বিজয়ী কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের বির্তাকিকদের মেডেল ও ট্রফি দেয়া হয়। সর্বশেষে কুষ্টিয়া অঞ্চলের বিজয়ী কুমারখালি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের গলায় মেডেল ও হাতে বিজয়ী ট্রফি তুলে দেয়া হয়। বিজয়ীরা ঢাকার জাতীয় উৎসবে অংশ নেবে। এরপর দেশসেরা বিতার্কিকদের নিয়ে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হবে জাতীয় বিতর্ক ক্যাম্পের।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন