শনিবার, মে ১৭, ২০১৪

জেলে বসেই মাদকচক্র ও সমমনাদের মাঠে নামিয়েছে

 আবারও সম্রাজ্যে ফিরে আসার নীল নঁকশায় ধর্ষণ ও পর্নোছবি নির্মাণের হোতারা 

হাওয়া ডেস্ক : গতবছরে জেলার চাঞ্চল্যকর ঘটনাগুলির অন্যতম প্রধান ঘটনা ছিল শতাধিক স্কুল ছাত্রীদের প্রতারিত করে তাদের ধর্ষণ ও সেই দৃশ্যের ধারণকৃত ভিডিওচিত্র বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, উঠতি বয়সী কিশোর-কিশোরীদের অবক্ষয়ের অন্ধকারে ঠেলে দেয়ার পাশাপাশি জেলাজুড়ে এক সামাজিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে এই জনপদের মানুষ। এই অভিযোগে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/শিক্ষার্থী, সচেতন মহলসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীদের তীব্র প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠে। যা সারা দেশের গনমাধ্যম গুলিতে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। এঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করে জড়িতদের গ্রেফতার করে প্রমানসহ আদালতে সৌপর্দ করে। সামজিক অবক্ষয়ের জঘন্যতম ঘটনায় জড়িত পর্নোগ্রাফী চক্রের প্রধান ৪জনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও অন্যরা আতœগোপনে যাওয়ায় তার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। গ্রেফতারকৃত ৪জন হাজতবাসী আসামীর মধ্যে প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম সজল ইতোমধ্যে হৃদরোগাক্রান্ত হয়ে ঢাকাতে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এখনও কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে হাজতবাস করছেন ঐ চক্রের প্রধান হেলাল উদ্দিন পান্না মাস্টার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরীচ্যুৎ নির্বাহী প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল, বীমাকর্মী ও হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম মনো। একসময়ের দোর্দন্ড প্রতাপ ও প্রভাবশালী এই ধর্ষক ও পর্ণচক্র জেলে বসেই আবারও তাদের ফেলে যাওয়া স¤্রাজ্যে ফিরে আসার নীলনঁকশা তৈরী করতে এবার মাঠে নামিয়েছে তাদের দোসরদের যার প্রধান নেতৃত্বে রয়েছে চিহ্নিত মাদক স¤্রাট সদ্য জেল থেকে ঐ অভিযোগে সাজা ভোগ করে বেড়িয়ে আসা হাটশ হরিপুরের মিরাজ। এই মিরাজের নেতৃত্বেই গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় হাটশ হরিপুর বাজারে টুটুল মুক্তি পরিষদ গঠন করে সভাসমাবেশ মিছিল ও মানববন্ধন পালিত হয়েছে; এসময় সেখানে পূর্ব থেকেই অপকর্মের দূর্নামধারী কয়েকজন শিক্ষক, ইউপি সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হরিপুর ইউনিয়নের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান মিলনসহ কতিপয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা যোগ দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন এলাকাবাসী জানান, আজকে যারা টুটুল’র মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছে, তাদের মধ্যে অধিকাংশরাই গতবছর ঐ ঘটনার সময় টুটুল’র চৌদ্দ গুষ্ঠির উদ্ধার করেছিল এবং বাড়িতে আগুন দেয়ার মত ঘটনা ঘটিয়েছিল। অথচ আজ তাদের দরদ উথ্লে পড়ছে। নিশ্চয় এর মধ্যে কোন ধান্দাবাজি আছে।
এরা ইতোমধ্যেই হাটশ হরিপুর ইউনিয়নবাসী নাম ব্যবহার করে ঐসব অপকর্মের হোতাদের নানা গুণকীর্তন করে অভিযুক্তদের মুক্তির দাবীতে একটি লিপলেট ছড়িয়ে দিয়ে এবং হাটশ হরিপুর বাজারে মিছিল, মিটিং, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করে সাধারণ জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলেছে বলে খুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন এক স্কুল শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম মুশতাক হোসেন মাসুদ জানান, আদালতে বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয় একান্তই আইনগত। এসব বিষয় আইনী ভাষায় বা প্রক্রিয়াতেই দেখতে হবে। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকে আইন দিয়েই নিজেকে নির্দোষ প্রমান করে বের হয়ে আসতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ ঐ আন্দোলনকারীদের সাথে আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন ইউপি সদস্য ব্যক্তিগত ভাবে সেখানে গিয়ে থাকলে এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইউনিয়ন পরিষদ আন্দোলনে একাত্ম হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা।
মডেল থানার এস আই মনির বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রন আইনে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে তিনি গুরুত্বসহকারে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত অভিযোগপত্র ও আনুসঙ্গিক প্রমানাদি দাখিল করেছেন আদালতে। মামলাটি এখন বিচারাধীন বলে জানালেন এসআই মনির। তিনি আরও বলেন, বিচারাধীন কোন মামলায় আদালত কর্তৃক ন্যায় বিচারকে প্রভাবিত বা বিঘিœত করতে পারে এমন কোন কাজ কেউ করলে তা আদালত অবমাননার সামিল হবে। তার বিরুদ্ধে সাবজুডিস বা কনটেম্পট অব কোর্ট বিবেচনায় মামলা হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন