শুক্রবার, মে ১৬, ২০১৪

এমপি‘র প্রতিনিধির অনুমতি না পাওয়ায় দৌলতপুরে গম দিতে পারেনি কোন কৃষক!

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় কৃষকের কাছ থেকে গম সংগ্রহ অভিযান নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় এমপি‘র লোকজন। কৃষকের নামে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ভাই ও ভাইয়ের জামাই এবং তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে কেনা হচ্ছে গম। এমপি‘র প্রতিনিধির অনুমতি না পাওয়ায় এক কেজি গম খাদ্য গুদামে নিয়ে যেতে পারেনি কোন কৃষক।  উপজেলা খাদ্য গুদাম সুত্রে জানাযায়, গত ২৩ এপ্রিল ১৪ মে পর্যন্ত প্রায় আড়াই‘শ কৃষকের নামে ৭‘শ টন গম কেনা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে ৫৩৪.৫১ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়। এবং ২১৩৪ মেট্রিক টন গম উৎপাদন হয়। চলতি মৌসুমে সরকারীভাবে উপজেলা খাদ্যগুদামে ৪ কোটি কুড়ি লক্ষ ৩৯ হাজার টাকার ১৫৫৭ মেট্রিক টন গম সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে কেনার সরকারী নির্দেশনা থাকলেও দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর ভাই মুকুল চৌধুরী ও তার ভাইয়ের জামাই তারেক এবং উপজেলা বাজারের কাদের নামে এক গম ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গম ক্রয়-বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক খাদ্যশষ্য ব্যবসায়ী জানান, সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর প্রতিনিধি আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সমস্তগম কেনা হচ্ছে। কাদেরের অনুমতি ছাড়া খাদ্যগুদামের দরজা খোলা সম্ভব নয় বলে তারা জানান। সাধারণ ব্যবসায়ীরা আরো জানান, ৫০ কেজি গমের বস্তাপ্রতি সংসদ সদস্যের ৭৫ টাকা, গুদাম রক্ষক, ডিসি ফুড, ইউএনও বাবদ ২০ টাকা, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ৪ টাকা, খাদ্যগুদামের কর্মচারী দারোয়ান ৩ টাকা, লেবার খরচ সাড়ে ৩ টাকা মোট ১‘শ ৫ টাকা ৫০ পয়সা কমিশন আদায় করা হচ্ছে। ফলে নোংরা আবর্জনা, ও ধুলাবালি মিশ্্িরত গম হলেও কোন সমস্যা হচ্ছেনা। এছাড়া সঠিকভাবে কমিশন আদায়ের জন্য সমস্ত বিল ভাউচার কাদেরের হাতে তুলে দিচ্ছেন খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ। একজন গম সরবরাহকারী ক্ষোভ
প্রকাশ করে জানালেন, কিছু লাভের আশায় ২৩-২৪ টাকা কেজি দরে গম কিনে নতুন বস্তা, লেবার, পরিবহন আবার খাদ্যগুদামের কমিশন দিয়ে তাকে লোকশান গুনতে হচ্ছে। কাপড়পোড়া গ্রামের এক কৃষক জানান, এবার তার ৩০ মণ গম হয়েছিল। কিন্তু অনুমতি না পাওয়ায় তিনি খাদ্যগুদামে গম বিক্রয় করতে পারলেননা। সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে উপজেলা গম ক্রয় কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোকতার হোসেনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন জানান, সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রত্যয়ন করলেই কেবল তার গম কেনা হবে। তবে, জেলা প্রশাসকের কথার সাথে বাস্তবতার কোন মিল পাওয়া যায়নি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন