বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৩

কুষ্টিয়ায় ঘনঘন লোডশেডিং জনজীবন অতিষ্ঠ

ষ্টাফ রিপোর্টার : কুষ্টিয়ায় ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রাত-দিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে শহরের লোকজন পাচ্ছে ৮/৯ ঘন্টা এবং পল্লী বিদ্যুতের আওতায় গ্রাম গঞ্জের মানুষ পাচ্ছে ৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের সমস্যায় মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। ভাপসা গরম আর ঘনঘন লোডশেডিং এর কারণে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ। জানা যায়, জাতীয় গ্রীড থেকে কুষ্টিয়ার মোট বিদ্যুৎ চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ করা হচ্ছে। শহরে প্রতিদিনই গড়ে ৫/৬ ঘন্টা লোড শেডিং হচ্ছে । আর পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন গ্রাম এলাকায় গড়ে ৭/৮ ঘন্টা থাকে বিদ্যুৎবিহীন। বিদ্যুতের এই লুকোচুরি খেলায় নাভিশ্বাস উঠেছে জনগণের। বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার ৩টি সাব স্টেশনের জন্য মোট ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে ৮/৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই কম। ফলে বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা কুষ্টিয়াবাসী। বিদ্যুতের ভেলকীবাজিতে কুষ্টিয়াবাসী নাকাল। চাহিদার তুলনায় ঘাটতির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখে এ ঘাটতি পূরণে চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারায় প্রতিদিন ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। পল্লীবিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলায় ৬৬৭ টি গ্রামে নির্মিত লাইনের পরিমাণ ৩৪০৬.৫১ কিঃ মিঃ। মোট সংযোগ সুবিধা পাচ্ছে ১,৩৮,৭৯৪টি। এর মধ্যে আবাসিক রয়েছে ৯৬০১০টি, বাণিজ্যিক রয়েছে ৬৬০১ টি। এছাড়াও গভীর নলকুপ রয়েছে ২০৩টি, অগভীর রয়েছে ২০২৩ টি, এলএলপি রয়েছে ১০৬টি, দাতব্য প্রতিষ্ঠান রযেছে ১২৫০টি, রাস্তার বাতি ২৫১ টি, শিল্প রয়েছে ১৪৯৯ টি। এছাড়াও পিডিবি গ্রাহকও কম নয়। সবমিলে এ জেলায় প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ পাচ্ছে একেবারেই কম। যার কারণে বিদ্যুৎ গ্রাহক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় জেলার শিল্প প্রতিষ্ঠান, কলকারখানার উৎপাদন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দেশের বৃহত্তম চাউলের মোকাম আইলচারা, খাজানগরের মিল চাতালের উৎপাদন ব্যবস্থা থমকে দাঁড়িয়েছে। বড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মিল-চাতালে উৎপাদন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ীরা ও মিল চাতালের মালিকরা। কুষ্টিয়া পল্লী এলাকায় একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে ৩/৪ ঘন্টা ধরে আসছে না। তারপর বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে শহরবাসী নাকাল। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৫/৬ ঘন্টার উপরে বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে শহরবাসী অভিযোগ করেছে। লোডশেডিংয়ের কবল থেকে শহরবাসী জেনারেটরের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। জেনারেটর দিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। শহর থেকে গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও করুণ। গ্রামে এ লোডশেডিং আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। এছাড়াও পল্লী অঞ্চলে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা একেবারেই বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা। তীব্র লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন