শনিবার, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৪

৫০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে

কুষ্টিয়া সুগার মিলে আখ মাড়াই শুরু

আব্দুম মুনিব : ৫০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে কুষ্টিয়া সুগার মিলে শুরু হয়েছে ২০১৪-১৫ আখ মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন। শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়া সুগার মিল প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মাহবুব-উল-আলম হানিফ আখ মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করেন। কুষ্টিয়া সুগার মিল ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ২৩ কোটি টাকা এবং ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ২৭ কোটি টাকা লোকসানে পড়ে। চলতি আখমাড়াই মৌসুমে কুষ্টিয়া সুগার মিল ৬ হাজার ৩ শত মেঃটন চিনি উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারন করেন। এদিকে কুষ্টিয়া চিনি কলের গোডাউনে তিন মৌসুমের প্রায় ৮হাজার মেট্রিক টনের ৩০ কোটি টাকার চিনি মজুদ রেখে চলতি বছরের মাড়াই মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। মিলের কেনকেরিয়ারে আখ নিক্ষেপর মধ্য দিয়ে মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন,পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আসগর আলী ও খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান সদরউদ্দিন খান। আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আহসান সিদ্দিক। মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আহসান সিদ্দিক জানান, ২০১৪-১৫ আখ মাড়াই মৌসুমের জন্য ৯০হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৭হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা ধার্য করা হয়েছে।  একটু সুত্র জানিয়েছে এবারো আশংকা করা হচ্ছে যে, মিলের ভয়াবহ রকমের ব্রেক ডাউন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে মিলের বেহালদশায় চাষীরা মিলে আখ দিয়ে কতটা আস্থা পাবে সেটা
নিয়ে চাষীদের মাঝেও চলছে নানা গুঞ্জন। গতবার চাষীরা মারাত্বকভাবে হয়রানী ও বিড়ম্বনার শিকার হওয়াতে চাষীদের মাঝেও তেমন উচ্ছাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অন্য একটি সুত্রে জানা জায়, কুষ্টিয়ার জেলার সর্ব বৃহৎ এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটি বর্তমান বেহাল দশার মধ্য পড়েছে। গত তিন মৌসুমের উৎপাদিত চিনির সিংহভাগ এখন অবিক্রিত অবস্থায় গোডাউনে পড়ে রয়েছে। যার অধিকাংশ খাওয়ার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। বাজারে প্যাকেটজাত চিনির মুল্য কম হওয়াতে এই চিনি বিক্রি হচ্ছে না। মিল কর্তৃপক্ষ চিনি বিক্রির জন্য কয়েক দফা চিনির মুল্য কমানোর পরেও মিলের চিনি বিক্রি হচ্ছে না। এদিকে চিনি বিক্রি না হওয়ায় গতবার মৌসুমে চাষীদের পাওনা পরিশোধে মিল কর্তৃপক্ষকে বিপাকে পড়তে হয়েছিল। তবে বিলম্বে চাষীদের পাওনা পরিশোধ হলেও মিলের কর্মকর্তা,কর্মচারী ও শ্রমিকদের বেতন ও ভাতাদি নিয়োমিত পরিশোধ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। কুষ্টিয়া চিনি কলের গোডাউনে গত তিন মৌসুমের উৎপাদিত চিনির মধ্য ৭হাজার ৯৩ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত পড়ে আছে যার বর্তমান ৩৭টাকা কেজি রেটে বাজার মুল্য২৯কোটি ৩৪লাখ ৪১হাজার টাকা। এদিকে শ্রমিক  কর্মচারীরা গত দুই মাস বেতন না পেয়ে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে পরিবার নিয়ে দিনপাত করছে। আখ মাড়াই মৌসুম শুরম্ন হওয়াতে মিলে মৌসুমী শ্রমিক কর্মচারীরা কাজে যোগ দিতে শুরু করেছে। চাষীরা আখের মুল্য সঠিক সময় পাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে।  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন