শনিবার, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৪

বালিয়াকান্দিতে পল্লী চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ভররামদিয়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রের মর্মান্বিক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ডাক্তার পলাতক রয়েছে। নিহত ওই ছাত্রের নাম পারভেজ শেখ (৯)। তার পিতার নাম জালাল শেখ। বাড়ী উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ভররামদিয়া গ্রামে। সে খোর্দ্দরামদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র। নিহত পারভেজের পিতা কৃষক জালাল শেখ জানান, তার ছেলে পারভেজ খোর্দ্দরামদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র। গত ৩ নভেম্বর প্রতিদিনের ন্যায় স্কুলে যায়। স্কুলে টিফিন দিলে খেলাধুলা করার সময় হোচট খেয়ে পড়ে মারাত্বক আহত হয়। অন্যান্যে শিক্ষার্থীরা তার মাকে খবর দিয়ে বাড়ীতে নিয়ে আসে। মাঠ থেকে বাড়ী ফিরে দেখি ছেলে অসুস্থ । স্থানীয় ডাক্তার আবজাল হোসেনকে ফোনে বাড়ীতে ডেকে আনলে সে কয়েকটি ইনজেকশন ও ট্যাবলেট দেয়। ইনজেকশন ও ট্যাবলেট খাওয়ার কিছুক্ষন পরই বড়ি করতে শুরু করে। ডাক্তারের পুনরায় ফোন দিয়ে জানালে সে আমাকে বুজ দেয় সমস্যা হবে না। বেলা যত গড়তে থাকে পারভেজ বমিসহ তত অসুস্থ হতে থাকে। ডাক্তারকে বার বার ফোন করলেও সে আর আসে না। ফোন বন্ধ করে রাখে। রাত ৯টার দিকে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে আনলে  কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। মামলা হলে লাশ কাটাকাটির ভয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে বাড়ীতে দাফন সম্পন্ন করে। পরদিন পারভেজের চাচা আজিবর শেখ ডাক্তার আবজাল হোসেনকে তেঁতলিয়া বাজারে লাঞ্ছিত করে। এর পর থেকেই এলাকায় বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। পারভেজের চাচা আজিবর শেখ জানান, ডাক্তার আবজাল হোসেন চিকিৎসা দিতে গিয়ে তালবাহানা করার কারণে তেঁতুলিয়া বাজারে গিয়ে আমার সাথে ঝগড়া হয়। তবে থাপ্পর
মারার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। পারভেজের মাতা সেলিনা খাতুন বিলাপ করতে করতে সাংবাদিকদের জানান, আমি আমার ছেলে পারভেজ হত্যাকারী ডাক্তারের বিচার চাই। ওই আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। তিনি পুত্র শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। শুক্রবার সকালে ডাক্তার আবজালের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে। এলাকার লোকজন জানান, ডাক্তার আবজাল হোসেন ইতিপুর্বে ভুল চিকিৎসা দিয়ে ছাগল-গরুসহ মানুষকে হত্যা করেছে। তার বিচার হওয়া উচিত। ডাক্তার আবজাল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আল্লার মাল আল্লা নিয়ে গেছে, আমার কি করার আছে। যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তবে তিনি দাবী করেন, কবিরাজী ঝাড়ভোক ও পানি পড়া খাওয়ানোর ফলে মারা যেতে পারে। তিনি ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন