সোমবার, জানুয়ারী ১৪, ২০১৩

শ্যামনগর গাবুরায় ভূমিহীন পল্লীতে সন্ত্রাসী হামলা

সালাউদ্দীনবাপ্পী, শ্যামনগর ॥ সুন্দরবন উপকূলীয় শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা ঘোপের খালের উত্তর পাড়ের ভূমিহীন পলৱীতে মেম্বর আবিয়ারের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসীরা ঘরবাড়ী ভাংচুর, আগুন, লুটপাট, ঘেরের বাধ কাটা, সহ হামলা করেছে। এ ঘটনায় ভুমিহীনরা বাধা দেয়ায় তিন ভুমিহীন নেতাকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। দু‘পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সকাল ৮ টায় গাবুরার ভূমিহীন পল্লীতে। এদিকে শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস'লে পৌছে অপহৃতদের উদ্ধার সহ সরেজমিনে তান্ডবলীলা পরিদর্শন করেছে। সন্ত্রাসীরা ভূমিহীন সংগঠনের সভাপতি আঃ রাজ্জাককে আটক রেখে তার স্ত্রী মায়া খাতুনকে শৱীলতাহানী ঘটনোর চেষ্টা চালায়। এ সময় তার কোলে থাকা ছয় মাসের শিশু রাকিবুলকে চিংড়ী রেনু হাড়ীর ভিতর ঘরের খাটের নীচে লুকিয়ে রাখলে তাকেও আহত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী স'ানীয় কুলসুম বিবি (৪০), রবিউল ইসলাম (৪২), হালিমা খাতুন (৩৫) জানান, গতকাল রোববার সকাল ৮ টার দিকে ডুমুরিয়া গ্রামের গহর আলীর পুত্র গাবুরা ইউপি মেম্বর আবিয়ার রহমান ও নওশের আলীর নেতৃত্বে দা, কুড়াল, গরানের লাঠি সহ দেড় শতাধিক ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন খোলপেটুয়া আর কপোতক্ষের নদীর তীরে গড়ে উঠা দ্বীপ নামে খ্যাত শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ঘোপের পাড় নামক ভূমিহীন পলৱীতে হামলা চালিয়ে ৩টি ঘর ভাংচুর , ১টি তে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া ভূমিহীন পলৱীর মধ্যে ছোট-বড় ৪/৫টি ঘেরের রাস্তা কেটে একাকার করে দেয়। ৩২ বিঘা খাস জমির উপর ৩০টি ভূমিহীন পরিবার সরকারী কাগজপত্র করে দীর্ঘ ৩০/৪০ বছর বসবাস করে আসছে। স'ানীয় মহিলা মেম্বর ফরিদা পারভীন জানান, গাবুরা ইউনিয়নের ঘোপের খালের পাড়ে ৮২ বিঘা খাস জমি আছে। তার মধ্যে ৩২ বিঘা জমি ৩০টি ভূমিহীন পরিবার বৈধ কাগজপত্র করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে। পাশে ৫০ বিঘার সরকারী সম্পত্তি জোরপূর্বক মেম্বর আবিয়ার রহমান দখল পূর্বক চিংড়ী ঘের করে রেখেছেন। আবিয়ার রহমান ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করে ওই সরকারী ৮২ বিঘা জমি নিজের দখলে আনার জন্য এ ধরনের তান্ডব লীলা চালিয়েছে ভূমিহীনদের উপর। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় নারী শিশু সহ ২০ জন আহত হয়েছে। স'ানীয় চেয়ারম্যান জি,এম মাছুদুল আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ধরনের বর্বরচিত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বির্বদ্ধে ব্যবস'া না নেওয়া হলে গাবুরা ইউনিয়নের সাধারন কোন মানুষ এদের কবল থেকে রক্ষা পাবে না। বিশিষ্ট সমাজ সেবক সাবেক ইউপি সদস্য আঃ মজিদ জানান, ভুমিহীনরা দীর্ঘ ৩০/৪০ বছর বসবাস করছে, এ সন্ত্রাসীরা তিনবার ভুমিহীনদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। গত শুক্রবার এ বিষয় নিয়ে শ্যামনগর থানায় শালিশী হলে শ্যামনগর থানা অফিসার ইনচার্জ আহসান হাবিব উভয় পক্ষকে স্ব স্ব স'ানে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় শ্যামনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন, ভূমিপলৱীর সভাপতি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক (৪০) তার স্ত্রী মায়া খাতুন (৩৫), ছেলে আমানুলৱাহ(১০), রাকিবুল (৬মাস) ইউনুচ গাজী (৪৫), ছায়েরা খাতুন (৪৫), রাবেয়া (৩৫) হালিমা খাতুন (৫০), শাহিনুর (৪০), আলামিন (২৮), সিরাজুল (৩০), রহিমা খাতুন (৪৫), হাবিবুল্যাহ (১০), আবু বক্কার (৫০) আহতদেরকে ট্রলারযোগে খোলপেটুয়া নদী পার করে আশংকাজনক অবস'ায় শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ঘটনাস'ল থেকে ফিরে গাবুরার ডুমুরিয়ার খেয়া ঘাটে সাংবাদিকরা পৌছালে সেখানে অবস'ানরত আবিয়ার মেম্বরের সাথে কথা হলে তিনি হামলা চালানো ঘটনায় উপসি'ত থাকা ও ভুমিহীন নেতা আঃ রাজ্জাক সহ তিন জনের অপহরণের কথা স্বীকার করেন। এছাড়া শ্যমনগরের কর্তব্যরত সাংবাদিক সহ শ্যামনগর থানা পুলিশের সামনে মেম্বর আবিয়ার উদ্ধত্যপূর্র্ণ আচরণ দেখিয়ে অপহৃত রাজ্জাককে ধরে চালান দেওয়ার জন্য ভাই (শ্যামনগরের আলোচিত আঃ লীগ নেতা) বলে দিয়েছে বলে শ্যামনগর থানার এসআই মহিদুল ইসলামকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান হাবিব জানান, ঘটনাস'লে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় যেই অপরাধী হোক তার বির্বদ্ধে আইনগত ব্যবস্তা নেওয়া হবে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন