শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ০১, ২০১৩

আদালতে বিচারাধীন সম্পত্তি জবর দখলের হুমকি দেয়া হচ্ছে

সালাউদ্দীন বাপ্পী, শ্যামনগর : বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষ বিরোধপুর্ন সম্পত্তি জবর দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। অর্থের প্রভাব খাটিয়ে তারা পুলিশকে ব্যবহার করে যেকোন সময়ে ঐ সম্পত্তি দখলে যাবারও হুমকি দিচ্ছে। হরিনগর গ্রামের গৌরপদ মন্ডল গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গৌরপদ মন্ডল বলেন, তার মা কুন্তিরানী মন্ডল ২৫/০৬/১৯৫৩ তারিখে (৪৬৫৬ ও ৪৬৫৭ নং দলিলমুলে) বাবুরাম ও তার ভাই দ্বারিকানাথ মন্ডলের নিকট থেকে ৪.৯৬ একর জমি ক্রয় করে। পরবর্তীতে বাবুরামের মৃত্যুর পর তারই দুই পুত্রের নিকট থেকে কুন্তিরানী মন্ডলের ভাতুষ্পুত্র (গৌরপদ মন্ডলের মামাত ভাই প্রভাষ মন্ডল) একই জমি ক্রয় করে। গৌরপদ মন্ডল অভিযোগ করে বলেন ভুল প্রক্রিয়ায় জমি ক্রয়ের কারনে দীর্ঘদিন ধরে তারা উক্ত জমির দখলে যেতে ব্যর্থ হয়। সুদীর্ঘ ৪৭ বছর নিজেদের দখলে রাখার পর ২০০০ সালে প্রভাষ মন্ডল লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে ঐ জমি দখল করে নেয়। এছাড়া সেসময় অর্থের বিনিময়ে
সেটেলমেন্ট অফিসকে “ম্যানেজ” করে নিজেদের নামে তারা উক্ত জমির রেকর্ড লাভেও সক্ষম হয়। গৌরপদ মন্ডল আরও বলেন, পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সর্বজন শ্রোদ্ধেয় জাবের মোড়লসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় গৌরপদ মন্ডল গং আবারও নিজ জমির দখল বুঝে পায়। আর ঐসময়ের পর থেকে মুলত প্রভাষ মন্ডল ও তার লোকজন বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন উক্ত জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাতে থাকে।
জনাকীর্ন সংবাদ সম্মেলনে গৌরপদ মন্ডল আরও বলেন, তিনি উক্ত জমি আগামী পাঁচ বছরের জন্য মোঃ মিজানুর রহমানকে লিজ দিয়েছেন। উক্ত লিজ গ্রহীতা বর্তমানে বাগদার পোনা ছেড়ে ঘের পরিচালনা করে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত লিজ গ্রহীতা মিজানুর রহমান জানান, তিনি পাঁচ বছরের জন্য লিজ গ্রহনের পর চাষ শুরু করেন। তার অভিযোগ প্রায় দু’মাস আগে ঘেরে মাছ ছাড়ার পর পুলিশ বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন বিরোধীয় ঐ জমি নিয়ে মিমাংসার জন্য আজ দু’পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে শ্যামনগর থানায় হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে। ইতিমধ্যে উক্ত পুলিশ অফিসার ঘেরে যেয়ে মাছ চাষসহ কোন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা না করার জন্য নির্দেশ দিয়ে আসে। নির্দেশের অন্যথা হলে লিজ গ্রহীতাকে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ারও তিনি হুমকি দেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গৌরপদ মন্ডল বলেন, বিরোধপুর্ন পনের বিঘা জমির মধ্যে একটি মামলার রায়ের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই প্রায় ছয় বিঘা জমিতে তাদের স্বত্ত্ব নিশ্চিত করে রায় ঘোষনা করেছে বিজ্ঞ আদালত। আর অপর মামলাটিতে পরাজিত হওয়ার আশংকায় দখল নিশ্চিত করার জন্য প্রভাষ মন্ডল গং এখন সর্বশক্তি নিয়োগ করছে।
আদালতে বিচারাধীন উক্ত বিরোধপুর্ন জমি নিয়ে বিবাদমান দু’পক্ষকে শ্যামনগর থানার ডাকার বিষয়ে এএসআই মামুন বলেন যে জমির রায় পেয়েছে সেই জমির সাথে রায়ের অপেক্ষায় থাকা জমির দাগ খতিয়ানের কোন মিল নাই। এছাড়া এক পক্ষ নয় বরং দু’পক্ষকে উক্ত জমিতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে বলে তিন দাবি করেন।
আদালতে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে তিনি কোন পক্ষের অনুকুলে রায় দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এএসআই মামুন বলেন, যে জমি নিয়ে তাদের ডাকা হয়েছে সেই জমির নিয়ে আদালতে কোন মামলা চলছে জানা নেই। তবে দু’পক্ষকে ডাকা হয়েছে যদি আদালতে কোন মামলা চলে তারা বিচারস্থলে তা প্রদর্শন করতে পারে।
তবে সংবাদ সম্মেলনে গৌরপদ মন্ডল বলেন খতিয়ানেসর ভুল থাকার কারনে দেওয়ানী আদালতে মামলা করা হয়েছে যার নং ৩২/১০। যা গত ১৯/৭/১০ তারিখে রুজু করা হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন