শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০১৩

জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবনা ৫ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি

কুষ্টিয়া বিসিক শিল্পনগরীর সম্প্রসারণ কার্যক্রম থমকে গেছে 

হাওয়া প্রতিবেদক > বিসিক শিল্প নগরী সম্প্রসারণে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন প্রস্তাবনা করলেও তা ৫ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা মিতিঝিল, কুষ্টিয়া বিসিক শিল্প কেন্দ্র -উপ-মহাব্যবস্থাপক, বিসিক শিল্প মালিক সমিতি সভাপতি কুষ্টিয়ার বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও অজ্ঞাত কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। থমকে গেছে কুষ্টিয়া বিসিক শিল্পনগরীর সম্প্রসারণ কার্যক্রম। এদিকে জমি সংকটের কারণে কুষ্টিয়ার বিসিকে উদ্যোক্তারা কল-কারখানা গড়তে চরমভাবে হিমসিম খেলেও বিসিক এলাকার জায়গা বিক্রির মহৌৎসবে মেতে উঠেছে এক শ্রেনীর কুচক্রী
ব্যক্তিবর্গ। বিসিক এলাকার ধানী জমি ভরাট করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্তে উঠেছে তারা। জমির সংকটে শিল্প কারখানা স্থাপন ব্যাহত হলেও কুচক্রীদের নগ্ন থাবায় কুষ্টিয়ার বিসিকের সম্পত্তি হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে। বিসিকের কেন রকম নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে কুচক্রীরা মাটি ভরাট করে আবাসিক বসতবাড়িসহ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে।  সুত্রমতে, কুষ্টিয়া শহরের কুমারগাড়া এলাকায় ১৯৬৭ সালে বিসিক শিল্প নগরী স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়। ওই সময় সাড়ে ১৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠা করা হয় বিসিক শিল্প নগরীর। মোট ৮৬টি প্লটের মধ্যে ৫টি প্লটে বিসিক শিল্পনগরীর অফিস স্থাপন করা হয়। অবশিষ্ট ৮১টি প্লট শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বর্তমানে বিসিকের ২৫টি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে ২১টি ইউনিট উৎপাদন করা হচ্ছে। উৎপাদনরত ইউনিটগুলোর বিস্তৃতি ও পরিসর বেড়ে যাওয়ায় বরাদ্দযোগ্য সকল প্লট ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। এরপর দিনের পর দিন কারখানা ও জমির চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরকার প্রতিবছর বিআরবি গ্র“পসহ কুষ্টিয়া বিসিক শিল্প নগরী হতে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলেও শিল্প এলাকার কোন উন্নয়ন করতে পারেনি। জায়গার অভাবে স্থাপন করা যাচ্ছে না নতুন নতুন কল-কারখানা। ফলে বেকার সমস্যারও সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। বিআরবি পণ্য সামগ্রী সারা বিশ্বে রপ্তানী করে গোটা বিশ্বে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্প নগরীর উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বিদেশে রপ্তানী করে বছরে প্রায় শত কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়। সরকারও বছরে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে থাকে। কুষ্টিয়ার এসব শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার একদিকে যেমন রাজস্ব আয় করছে। অপরদিকে এ জেলার প্রায় ১০ হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। শিল্প কল-কারকারখানা ব্যবসা বাণিজ্যের উজ্জল সম্ভাবনাময় এ জেলায় পণ্য সামগ্রীর চাহিদার কারণে শিল্পোদ্যোক্তারা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার ঝোঁক বাড়লেও বিসিক শিল্প নগরীতে জমির অভাবে তা গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে লক্ষ্য রেখেই কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ২০০৮ সালে বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা মিতিঝিল, কুষ্টিয়া বিসিক শিল্প কেন্দ্র -উপ-মহাব্যবস্থাপক, বিসিক শিল্প মালিক সমিতি সভাপতি কুষ্টিয়ার বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু দীর্ঘ ৫ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক নেপুর আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই পত্রে উল্লেখ করেন, কুষ্টিয়া শিল্পনগরী সম্প্রসারন অতিব জরুরী বলে তা প্রস্তাবনা আকারে শিল্প মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্প নগরীকে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান সৃষ্টিকারী বিসিক শিল্পনগরীকে সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুষ্টিয়া বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মোসাদ্দেকুল মহসীন স্বাক্ষরিত একটি পত্র ঢাকা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক বরাবর প্রেরণ করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণেই তার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কুষ্টিয়া শিল্পনগরীর এলাকায় সম্প্রসারণের পরিবর্তে দখলের চেষ্টা চলছে। সেখানে বেহাত হয়ে যাচ্ছে বিসিক শিল্প নগরীর এলাকার সম্পত্তি। গড়ে তোলা হচ্ছে স্থাপনা। তাই বেকার সমস্যা সমাধানে ও নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনে বিসিক শিল্প নগরীর জমি যাতে হাত ছাড়া না হয় সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এ দাবী জেলার সুশীল সমাজ ও জেলার শিল্পদোক্তাদের।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন