শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০১৩

ঝিনাইদহর খবর

ঝিনাইদহে শিবিরের মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ককটেল 

ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, ২ পুলিশসহ ৭ জন আহত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহে শিবিরের মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ককটেল ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। এ সময় ২ পুলিশসহ ৭ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কবি সুকান্ত সড়কে প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মিছিল থেকে ৪ কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে শিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেনের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে ইসলামী ছাত্র শিবির সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের শেরে বাংলা সড়ক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন শিবিরের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা আন্দোলন সম্পাদক মুহম্মদ মহিউদ্দিন। হাটের রাস্তা ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে শিবির কর্মীরা। সমাবেশে জেলা শিবিরের সভাপতি শেখ শাহজালাল, শহর সভাপতি ইবনুল ইসলাম পারভেজ, সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম, ছাত্রনেতা মনিরুল, আলী আজম, সুমন হোসেন বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ চলাকালে পুলিশ বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে শিবির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ও ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় পুলিশ ও শিবির কর্মীদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে ২ পুলিশ ও ৫ শিবির কর্মী আহত হয়। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি কাজী জালাল আহমেদ জানান, পুলিশ ৬ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৩ রাউন্ড টিয়ারসেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ ঘটনার পর শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


ঝিনাইদহে বাসচাপায় বৃদ্ধ নিহত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহে যাত্রীবাহি বাসের চাপায় কিতাবদী মোল্লা (৯০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের আমতলা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি হরিণাকুণ্ডু উপজেলার মকিমপুর গ্রামের মৃত বিশু মোল্লার ছেলে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এক বৃদ্ধ রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় ঝিনাইদহ থেকে কুষ্টিয়াগামী গড়াই পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।  ঝিনাইদহ সদর এসআই এমদাদ হোসেন জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক বাসটি ভাইট বাজার থেকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।


হরিণাকুণ্ডুতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ

আত্মসাতের অভিযোগ : জেলা প্রশাসনের তদন্ত শুরু

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : দুর্নীতির দায়ে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মাস্টারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অর্থ আত্মসাতের তথ্য বেরিয়ে আসছে। সরকারিভাবে তদন্তে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৩৭ হাজার ৫শ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হলেও বহু অপকর্মের তথ্য অজানা রয়ে গেছে। এরমধ্যে হাট ইজারা ও ওয়ান পার্সেন্ট এর টাকার পরিমাণ বেশি বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে যান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সকল মেম্বর ও এলাকাবাসীর বক্তব্য শোনেন। এদিকে এই চেয়ারম্যানকে রক্ষায় উঠেপড়ে লেগেছে একটি মহল।
হরিণাকুণ্ডু সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ৭৩ হাজার টাকা, একই বছরের ১১ অক্টোবর এক লাখ ৭ হাজার টাকা, ২০১২ সালের ২৯ মার্চ ৯৫ হাজার টাকা, একই বছরের ১৩ আগস্ট এক লাখ ৪৪ হাজার টাকা, ১৮ জুলাই ২১ হাজার টাকা ও ১৮ আগস্ট ৮৫ হাজার ৬৭০ টাকাসহ মোট ৯টি চেকে ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৩০০ টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে উত্তোলন করেছেন। বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বররা অভিযোগ করেন, এলজিএসপির ২২টি প্রকল্প দেখিয়ে মাত্র ১০টি বাস্তবায়ন করেছেন দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের। বাকী ১২টির টাকা পকেটস্থ করেন। হাট বাজারের টাকা তুলে ৮টি প্রকল্প দেখিয়ে একটিও বাস্তবায়ন করেনি। ৬৫ হাজার টাকা মূল্যেও একটি ল্যাপটপ আত্মসাত করেছেন। বরাদ্দকৃত ২২টি টিউবওয়েলের অর্ধেকই দেননি। সাঁকো বানানোর জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ২৬ হাজার টাকা ব্যয় দেখালেও গ্রামবাসী বাঁশ কাঠ দিয়ে নিজেরাই সাঁকো মেরামত করেছেন। মসজিদ মাদ্রাসার টাকা পর্যন্ত চেয়ারম্যান কাদেরের হাত থেকে রেহায় পায়নি। এই মহাদুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের প্রভাবশালীদের ধরে এখন স্বপদে বহাল হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ। বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, টাকা উত্তোলনের সাথে ব্যয়ের কোন মিল পাইনি। তাছাড়া যে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে বলে কাগজ কলমে দেখানো হচ্ছে বাস্তবে তারও কোন অস্তিত্ব নেই।
প্রসঙ্গত, সরকারি টাকা আত্মসাৎসহ নানাবিধ দুর্নীতির দায়ে গত ৩০ জুন রোববার সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় রঘুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মাস্টারকে। এদিকে এলাকাবাসী জানান, আওয়ামীলীগের সমর্থন নিয়ে আব্দুল কাদের মাস্টার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বেপরোয়া ভাবে সরকারি অর্থ লোপাট করতে থাকেন। রাস্তার ধারে সরকারি গাছ বিক্রি থেকে শুরু করে এমন কোন কাজ নেই যে তিনি করেননি। টিআর, এলজিএসপি, কাবিখা ও কর্মসৃজনের টাকা তিনি কারো ভাগ না দিয়ে একাই পকেটস্থ করতেন বলে মেম্বাররা অভিযোগ করেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন