রবিবার, ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০১৩

কাজী আরেফসহ ৫ জাসদ নেতা হত্যার ১৪ বছর

স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কাজী আরেফসহ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) পাঁচ নেতা হত্যাকা-ের ১৪তম বার্ষিকী শনিবার। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হচ্ছে দিনটি। এ উপলক্ষে কাজী আরেফ পরিষদ হত্যাকা- স্থল কালিদাসপুর স্কুল মাঠ ও শহীদ ইয়াকুব আলী ট্রাস্ট ফিলিপনগর পিএম কলেজে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এদিকে, ১৪ বছর পার হয়ে গেলেও নৃশংস এ হত্যাকা-ের বিচার হয়নি। সনাক্ত করা যায়নি মূল পরিকল্পনাকারীদের। ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের আড়িয়া ইউনিয়নের কালিদাসপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সন্ত্রাসবিরোধী এক জনসভায় কাজী আরেফ আহমেদ, জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরাইল হোসেন ও শমসের মন্ডল একদল সন্ত্রাসীর গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ঘটনার দিনই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। মামলাটি পরদিন সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে হত্যাকা-ের সাড়ে পাঁচ বছর পর ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১০ আসামির ফাঁসি ও ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদ- দেন। রায়ের বিরুদ্ধে আসামি পক্ষ আপিল করলে ২০০৮ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নিম্ন আদালতের মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ১০ আসামির মধ্যে ৯ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত এক আসামি হাইকোর্টে মামলা চলাকালে মারা যান। একইসঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত ১২ আসামির সাজা মওকুফ করেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ফাঁসির তিন আসামি রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু, আনোয়ার হোসেন ও এলাছ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। গত ২০১১ সালের ৭ আগস্ট প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি শেষে আপিলকারী ফাঁসির ৩ আসামিসহ ৯ জনের সাজা বহাল রাখেন। তবে, এখন পর্যন্ত রায় কার্যকর হয়নি। এত দিনেও রায় কার্যকর না হওয়ায় নিহতের স্বজনদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা .কাজী আরেফ আহমেদের ভাতিজা কাজী হাবিবুর রহমান রন্জু জানান, তার চাচা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রূপকার ও একজন জাতীয় নেতা। তাই সরকারের উচিৎ মামলাটি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে ফাঁসির রায় কার্যকর করা। নিহত সমশের মন্ডলের স্ত্রী সাহারা বানু (৭০) জানান, প্রতি বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি আসলে তার স্বামীকে নিয়ে মাতামাতি হয়। কিন্তু সারা বছর কেউ খোঁজ নেয় না। তবে, শুধু নিহতদের স্বজনরা নন চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকা-ের রায় দ্রুত কার্যকর করা হবে—এমন দাবি এখন এলাকার সব মানুষের।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন