শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৩

ঝিনাইদহে বিকল্প স্থানে জনসভা : ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আহত ৫

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করার দাবিতে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির লংমার্চ ঝিনাইদহে জনসভা করেছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে মাগুরা হয়ে লংমার্চ বহরটি ঝিনাইদহ জেলার হাটগোপালপুরে প্রবেশ করে। এরপর সেখানে একটি পথসভা শেষে লংমার্চ বহরটি ঝিনাইদহ শহরে প্রবেশ করলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় শহরের বাস টার্মিনালে মানববন্ধন শেষে শহরে একটি বিশাল মিছিল বের করা হয়।
এদিকে ঝিনাইদহ জেলা শহরের প্রাণকেদ্র পায়রা চত্বরে আগ থেকেই জনসভার লিখিত অনুমতি চাওয়া হলেও জনসভার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। বাসদ ঝিনাইদহ জেলা শাখার সমন্বয়ক ও লংমার্চ প্রস্তুতি প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির আহবায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, শহরের পায়রা চত্বরে জনসভার জন্য লিখিত ভাবে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু দেয়নি। তারা শহরের বাইরে আরাপপুরে জনসভার জন্য বলেছেন। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি কাজী জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, তাদের নিষেধ করা হয়নি, জনসভা করতে পারবেন। এদিকে লংমার্চ প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব উপাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম জানান, ডিসি এসপিকে লিখিতভাবে অবহিত করা হলেও প্রধানমন্ত্রীর জনসভার পূর্ব প্রস্তুতির কথা বলে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। উপরের নিষেধ আছে এমন কথা ফোনে বারবার জানিয়েছে ডিএসবি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। জনসভা করতে গেলে মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় তাদেরকে।
পায়রা চত্ত্বরে জনসভার অনুমতি না দেয়ায় শহরের পাশে আরাপপুরে বিকল্প স্থানে সাড়ে ৪টার দিকে জনসভা শুরু হয়। লংমার্চ উপলক্ষ্যে প্রায় ৪ হাজার নেতা-কর্মী ঝিনাইদহ শহরে উপস্থিত হয়। লংমার্চ প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক কাজী ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, সদস্য সচিব আনু মোহাম্মদ সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। জনসভাটি পরিচালনা করেন উপাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম।
জনসভায় বক্তারা বলেন, সুন্দরবনন ধ্বংসকারী কয়লা ভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করাসহ ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার যদি এ নির্মান কাজ বন্ধ না করে তাহলে আমাদের আরো কঠোর আন্দোলন করে তা প্রতিহত করতে হবে। এছাড়া এ আন্দোলনে সকলকে শরিক হওয়ার জন্য আহবান জানানো হয়। সন্ধ্যায় লংমার্চটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শহরে এক পথসভায় মিলিত হয়। পরে লংমার্চটি যশোর অভিমুখে রওনা হয়।
এদিকে লংমার্চ বহরে ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৫ কর্মী লাঞ্ছিত ও আহত হয়। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে ঢাকার লংমার্চ শহরের ওয়াজির আলী হাইস্কুল মাঠে যাত্রা বিরতি করে। তখন খাবার বিতরণের সময় কথাকাটাকাটির জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। উভয় দলের কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে মারপিট শুরু করে। উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মিছিল করে। এসময় লংমার্চে আগত অতিথিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন