বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২৪, ২০১৩

ঝিনাইদহে এবার সাড়ে ৩ বছরের শিশু ধর্ষিত : প্রভাবশালীদের চাপে পরিবার

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পার্বতিপুর গ্রামে ওমান প্রবাসির সাড়ে ৩ বছরের এক শিশু কন্যা ধর্ষনের শিকার হয়েছে। গত সোমবার রাতে এই ধর্ষনের ঘটনা ঘটলেও প্রভাবশালীদের চাপে ভিকটিমের পরিবার ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করতে সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাশবিক নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা শিল্পী খাতুন জানান, সোমবার রাতে তিনি পাশের বাড়িতে ছিলেন। এই সুযোগে প্রতিবেশি আরব আলীর লম্পট ছেলে কাসেম আলী (৪৫) বাড়িতে একা পেয়ে তার শিশু কন্যাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা শিশুর চিৎকারে আশপাশের মহিলারা ছুটে এলে ধর্ষক কাসেম আলী পালিয়ে যায়। এখনো পর্যন্ত সে পালিয়ে রয়েছে বলে গ্রামবাসি সুত্রে জানা গেছে। এদিকে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে পড়লে গ্রামের প্রভাবশালী একটি মহল ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে ভিকটিমের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। প্রভাবশালী মহলটি এখনো পর্যন্ত মামলা তো দুরের কথা শিশুটির চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে দিচ্ছে না। শিশুটির রক্তক্ষরনে বর্তমান তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে ভিকটিমের মা জানান।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে পার্বতীপুর গ্রামে শালিস বৈঠকে ধর্ষনের ঘটনাটি মিমাংশা করে দেওয়ার নামে প্রভাবশালী মহলটি মামলা না করতে ভিকটিমের পরিবারকে শাসানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান লিটন বিশ্বাস জানান, তিনি ঘটনা লোক মুখে শুনে বুধবার দুপুরে ভিকটিমের বাড়িতে যান। তিনি আরো জানান, শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চত হওয়া গেছে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। বিষয়টি ধামা চাপা দিতে ধর্ষনের ঘটনাটি তাকে জানানো হয়নি বলে তিনি মনে করেন। তিনি ধর্ষকের বিচার দাবী করেন।
এলাকাবাসি সুত্রে জানা গেছে, এলাকার কিছু দালাল শ্রেণীর মানুষ ধর্ষকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা না করতে হুমকী দিচ্ছে। এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর তিনি ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি মেয়ে পক্ষের লোকজন স্বীকার করছে না।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাই পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক ওহিদুর রহমান জানান, তিনি ধর্ষককে গ্রেফতার করতে এখনো পর্যন্ত এলাকায় রয়েছেন। কিন্তু আসামী ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছেন। ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় ভিকটিমের পরিবার এখনো পর্যন্ত মামলা করতে আসেনি বলে তিনি জানান। এদিকে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার ঝিনাইদহ ইউনিটের সভাপতি আমিনুর রহমান টুকু জানান, বুধবার দুপুরে তিনি ঘটনাটি তদন্ত করতে এলাকায় যান। শিশুটি ধর্ষিত হওয়ার পরও শিশুটি চিকিৎসা ও আইনের সহায়তা পায়নি বলে তিনি মনে করেন। মানবাধিকারের ডার্কস্টার ইউনিট ধর্ষিত শিশুটির চিকিৎসা, ডাক্তারী পরীক্ষা ও আইনগত সহায়তার পাশাপাশি তার স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমিনুর রহমান টুকু সাংবাদিকদের জানান। বুধবার বিকালে ধর্ষিত শিশুটির ডাক্তারী পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে বলে মানবাধিকারের ডার্কস্টার কর্মী বাবুল কুন্ডু জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন