বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২৪, ২০১৩

ইবির ছাত্রলীগ নেতা গুম

 উদ্ধারের দাবিতে সড়ক অবরোধ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যাল প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ঢাকা থেকে গুম হয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। নিখোঁজ সাইফুলের সকল বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও ঢাকার সবগুলো থানায় খোঁজ নিয়েও এসংবাদ লিখা পর্যন্ত (সন্ধা: ৭টা) তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। সাইফুলকে উদ্ধারের দাবিতে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বঙ্গবন্ধু হল শাখার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আজ সকাল ১০টার মধ্যে সাইফুলের কোনো সন্ধান পাওয়া না গেলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবার হুমকি দিয়েছে। সাইফুল ইবির আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। এব্যাপারে ঢাকার তেজগাঁও থানা ও ইবি থানায় পৃথক দুটি সাধারণ ডায়রী করা হয়েছে। নিখোঁজ সাইফুলের পরিবার ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সংসদের নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করার জন্য ইবির বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ঢাকা যান। মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীর সাথে সাংগঠনিক কাজ শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফার্মগেট থেকে লেগুনায় চড়ে কাজীপাড়া অবস্থিত নিজ বন্ধু রানার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সাইফুল। তারপর থেকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ফার্মগেট পর্যন্ত জুয়েল নামে এক বন্ধু তার সাথে ছিল। ইবি ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজু বলেন, “আমি, সাইফুল ও হালিম এবং কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল ঝিগাতলায় একসাথে ছিলাম। সেখানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারন সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের সাথে আমাদের সাক্ষাৎ হয়। সেখানে তার সাথে কথা শেষে আমি ও হালিম খিলক্ষেতের দিকে যাই। সাইফুল ও জুয়েল ফার্মগেইটের দিকে যায়। জুয়েল সাইফুলকে ফার্মগেইটে নামিয়ে দিয়ে নিজ বাসায় চলে যায়। ফার্মগেইটে নামার পরও সাইফুলের সাথে আমার মোবাইলে কথা হয়েছে। কিন্তু এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে এবং তাকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা।”  সাইফুলের বড় ভাই সাদ আহমেদ জানান, ‘সাইফুল গত মঙ্গলবার ঢাকায় যায়। রাত ১০টা পর্যন্ত তার সাথে আমাদের যোগাযোগ ছিলো। কিন্তু এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন যায়গায় খোজ নিয়েও আমরা তার কোন সন্ধান পাচ্ছি না।’ কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলী মর্তুজা খসরু বলেন, “ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল, মিজু, হালিম ও জুয়েল পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। তারা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করার জন্যই একসাথে ঢাকা গিয়েছিল। নিখোজ হওয়ার পর থেকে ঢাকার প্রত্যেকটি থানা জানানো হয়েছে এবং তেজগাঁও থানায় একটি সাধারন ডায়রি করা হয়েছে।” এদিকে সাইফুলের উদ্ধারের দাবিতে বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গতকাল খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে মিছিল-সমাবেশ করে। দুপুর দুইটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত দুই ঘন্টাব্যাপী অবরোধে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সবুজ, বাবু, সাজু প্রমুখ। এসময় বক্তারা নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতার উদ্ধারের জন্য আজ ১০টা পর্যন্ত সময় ঁেবধে দেন। এসময়ের মধ্যে সাইফুলকে মুক্তি না দেওয়া হলে কঠোর আন্দোলনে যাবার হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করে মিছিল ও সমাবেশ করলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে শান্ত করি। এছাড়া নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতাকে উদ্ধারের জন্য সব জাযগায় যোগাযোগ চলছে।’ উল্লেখ্য, বিতর্কিত বিভিন্ন কর্মকান্ড ও সংগঠনের শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগে গত ১৯ নভেম্বর ইবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। জাহাঙ্গীর হোসেন ও শামসুজ্জামান তুহিনের কমিটি বিলুপ্তির পর থেকে নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়ার জন্য ইবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রে লবিং চালিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু হলের সভাপতি সাইফুল, মিজু, হালিম, জুয়েল কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলী মোর্তুজা খসরু সমর্থিত গ্রুপের নেতা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন