মঙ্গলবার, জানুয়ারী ১৫, ২০১৩

দলে পদ পেতে কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ নেতাদের : ফেব্র“য়ারীর প্রথম দিকে কুষ্টিয়া আ’লীগের কাউন্সিল ॥ কারা আসছেন জেলার নেতৃত্বে


হাওয়া প্রতিবেদক : কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০০৬ সালে। একই কমিটি দিয়ে চলছে ৭ বছর। মাঝখানে একাধিকবার উদ্যোগ নেয়ার পরও কাউন্সিল হয়নি। বর্তমান কমিটির অনেক পদ এখন শূকজন নেতা নির্ভর কুষ্টিয়া আওয়ামী লীগ। তবে দেরিতে হলেও নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আর তা খুব শীঘ্রই। জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্র“য়ারির প্রথম দিকে নতুন কমিটি উপহার পাবে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। কমিটিতে কারা
আসছেন তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। কোন আযোগ্যকে নয়, যোগ্য নেতাকে নের্তৃত্বে দেখতে চান কর্মীরা। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কাউন্সিল থেকে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক দুই মাসের মধ্যে প্রতিটি জেলায় নতুন কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এমন নির্দেশের পর নড়েচড়ে বসেছেন জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। কাউন্সিলের
তারিখ ঘোষণা করা না হলেও ভিতরে ভিতরে চলছে নানা প্রস্তুতি। দলের একটি সুত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়ার সন্তান আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ কানাডা সফরে গেছেন। তিনি দেশে ফিরে আসার পর কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সলের তারিখ ও স্থান ঘোষণা করা হবে। কাউন্সিলের ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আমিনুল হক রতনের সাথে আলাপকালে জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা যেসব জেলায় দীর্ঘদিন ধরে এক কমিটি রয়েছে সেখানে দ্রুত নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। হানিফ ভাই কানাডা সফরে আছেন। তিনি দেশে ফিরলে আলোচনা করে কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা হবে। জানুয়ারির শেষে না হলেও ফেব্র“য়ারির প্রথম দিকে নতুন কমিটি আসতে পারে। তবে কমিটি গঠনের আগেই কারা নতুন নেতৃত্বে আসছেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কর্মীরা নানা হিসাব-নিকাশ কষছেন। বর্তমান কমিটির নেতারায় বহাল থাকছেন না-কি নতুন নেতৃত্ব আসছে তা নিয়েও নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কর্মীদের মনে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে নানা তথ্য মিলেছে। সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থী আসতে পারেন। তবে শেষ পর্যন্ত কার নাম আসবে তা সঠিক করে কেউই বলতে পারছেন না। বর্তমান সভাপতি খন্দকার রাশীদুজ্জামান দুদু অসুস্থ দীর্ঘদিন। নতুন কমিটি থেকে এ নেতার বাদ পড়ার সম্ভাবনা নিরানব্বই ভাগ। সভাপতি পদে তিন নেতার নাম জোরে সোরে আলোচিত হচ্ছে এর মধ্যে জেলা পরিষদের প্রশাসক জাহিদ হোসেন জাফর, খোকসা উপজেলা চেয়ার‌্যান সদর উদ্দিন খান এবং আওয়ামী লীগ নেতা পৌর মেয়র আনোয়ার আলী। ইতিমধ্যে সরকারের একাধিক প্রভাবশালী গয়েন্দা সংস্থা মাঠ পর্যায়ে জরিপ চালিয়ে একটি সারমর্ম প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা দিয়েছে বলে বিশেষ সুত্র জানিয়েছে। সভাপতি পদে কাকে আনলে দলের জন্য ভাল হবে তাও জরিপে মতামত দেয়া হয়েছে। তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করেই সভাপতি নির্বাচিত করা হবে বলে জানা গেছে। সেক্ষেত্রে ইমেজ ও আগামী দিনে দলের হাল শক্তভাবে ধরতে পারবেন এমন নেতাকে নিয়ে আসা হবে নের্তৃত্বে। বর্তমান কমিটির সাধারন সম্পাদক আজগর আলী। তিনি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছেন। দলে তাকে নিয়ে নানা সমালোচনা রয়েছে। আজগর আলী সমর্থকরা মনে করেন, শেষ পর্যন্ত তাকেই বহাল রাখা হতে পারে। তবে জেলা কমিটির একাধিক নেতা মনে করেন, এ পদে পরিবর্তন আসতে পারে। জেলা আওয়ামী লীগর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা.আমিনুল হক রতনকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। তবে কেউ কেউ মনে করেন মিরপুর-ভেড়ামরা থেকেও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাউকে দেখা যেতে পারে। একাধিক সুত্র জানিয়েছে, মাহবুব-উল-আলম হানিফ আগামী সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ সদর আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হবেন। সেক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগে এমন নের্তৃত্ব আনা হবে যাতে নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্প্রতি উপজেলা কমিটি দেখা গেছে অনেক নতুন মুখ। যারা বয়সে তরুণ। কমিটি গঠনের সময় প্রবীণ ও নবীন সমন্বয় করা হতে পারে। যাতে দূর্বল হয়ে পড়া দল চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ইতিমধ্যে দলে পদ পেতে কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বেশ কয়েকজন নেতা। আবার আগের পদ ঠিক রাখতে অনেকে মরিয়া। তবে দল ক্ষমতায় আসার পর যেসব নেতার বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি নিয়োগ বাণিজ্য, চাল ভাগাভাগি, দলে বিভাজন ও সন্ত্রাসী লালন পালনের অভিযোগ রয়েছে তাদের ব্যাপারে থাকছে সতর্ক সংকেত। বিস্তর অভিযোগ রয়েছে এমন নেতাদের এবারের কমিটিতে পদ পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করেন কর্মীরা। একাধিক তৃণমূল কর্মী জানান, কোন বিতর্কিত নেতাকে কমিটিতে রাখা ঠিক হবে না। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী বলেন, দ্রুত সম্মেলন করার ব্যাপারে দলীয় নির্দেশ রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন