বুধবার, ফেব্রুয়ারী ২০, ২০১৩

ইসলামী রাজনীতি বন্ধের চক্রান্ত সহ্য করা হবে না : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

হাওয়া ডেস্ক : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, কোন অজুহাতে ধর্মদ্রোহী নাস্তিক গোষ্ঠীর আস্ফালন সহ্য করা হবে না। নাস্তিক ও ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতকারী ব¬গারদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে, নতুবা মুসলমানদের ধৈর্য্যরে বাঁধ ভেঙ্গে গেলে পরিণাম ভাল হবে না। আজ দুপুরে পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ধর্মদ্রোহী নাস্তিক ব¬গারদের আল্লাহ, রাসূল, কুরআন ও ইসলাম বিরোধী অশ্লীল প্রচারনার নিন্দা এবং ইসলামবিদ্বেষী চক্রের ইসলামী রাজনীতি বন্ধের চক্রান্তের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুফতী ফয়জুল করীম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে জানতে পেরেছি একটি চরম ইসলাম বিরোধী নাস্তিক ব¬গারচক্র মহান আল্লাহ তা’য়ালা, মহানবী হযরত মুহাম্মাদ স., পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন, আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলাম, ইসলামের মৌলিক ইবাদত নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, কুরবানী, তাহাজ্জুত, উম্মাহাতুল মু’মিনীন, সাহাবায়ে কেরামসহ ইসলামের বিভিন্ন বিধিবিধান নিয়ে অশ¬ীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও প্রচারনা চালাচ্ছে। আমরা নিজেরাও অনুসন্ধান চালিয়ে বিষয়টির সত্যতা পেয়েছি। আমরা বিস্মিত হয়েছি ৯০ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত একটি দেশে নাস্তিকচক্র কি করে ইসলামের বিরুদ্ধে এজাতীয় উচ্চারণের অনুপযোগী ভাষায় অশ¬ীলতা ছড়াতে পারে।
তিনি অবিলম্বে ইসলাম বিরোধী প্রচারণায় লিপ্ত সকল ব্লগ বন্ধ করে দিয়ে আল্লাহ, নবী-রাসূলসহ ইসলামী বিধিবিধানের বিরুদ্ধে যারা অশ্লীল প্রচারণায় লিপ্ত তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানাান। এজন্য ব্লাসফেমী আইন প্রণয়নেরও দাবী জানান তিনি।
তিনি বলেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আড়ালে একটি নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠী ইসলামী রাজনীতি বন্ধেরও আওয়াজ তুলছে। ক্ষমতাসীন সরকারের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা কোন কোন ইসলামবিরোধী মন্ত্রীও নাস্তিকদের এই সুরে সুর মেলাচ্ছে। আমাদের ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়ার একটি অংশ এই নাস্তিকচক্রকে উস্কে দিচ্ছে। আমরা গভীরভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার এই নাস্তিকচক্রটি দ্বারা প্রবলভাবে প্রভাবিত। এই অশুভ খেলা বন্ধ না হলে দেশের ইসলামপ্রিয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারকে ইসলামবিরোধী নাস্তিক্যবাদী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে ক্ষমতা থেকে ছুড়ে ফেলার জন্যে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তুলবে।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, আজ ‘৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুটি আওয়ামীলীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। তারা বিচার শুরুও করেছে। আমরাও ৭১ এর প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। এ ইস্যুতে জাতীয় পর্যায়ে তেমন একটা অনৈক্য নেই। ইনসাফপূর্ণ বিচার হলে জাতি অবশ্যই উপকৃত হবে। কিন্তু দেশবাসী আজ দেখতে পাচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে সরকার একটা নোংরা রাজনৈতিক খেলা শুরু করেছে। বিচার নিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের রাজনৈতিক খেলার সূত্র ধরেই শাহবাগে তরণ-তরুণীদের অবস্থান। আর এখন এই তরুণদের অবস্থানকে কেন্দ্র করেও সরকার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।
আসলে সরকার একটা আগুন নিয়ে খেলছে। আর কিছু মিডিয়া এই আগুনে বাতাস দিচ্ছে। আমরা আজ পরিষ্কারভাবে আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই সব তামাশা বন্ধ করুন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করুন, সর্বত্র ইনসাফ ও শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করুন। দেশব্যাপী আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক এবং টুপি দাড়িওয়ালা মুসল¬ীদের উপর হয়রানী ও নিপীড়ন বন্ধ করুন। নয়তো দুনিয়া আখেরাত কোথাও পরিণতি ভাল হবে না।
নিহত ব্লগার রাজিবের জানাজা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নর উত্তরে মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, নারী-পুরুষ ও মুসলমান-হিন্দু-খ্রিস্টান একত্রে দাড়িয়ে বিশৃঙ্খলভাবে যে নামাজ পড়া হয়েছে এটি জানাজার নামাজকে প্রহসনে পরিণত করার নামান্তর।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শাহবাগ আন্দোলন স্বাধীন বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এখন বিচারকরা আর স্বাধীনভাবে বিচার করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরী হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নিম্নোক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়-
কর্মসূচী : আগামীকাল বিকাল ৩ টায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল। নবীর দুশমন নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরীর লক্ষ্যে আগামী শুক্রবার দেশব্যাপী মসজিদে মসজিদে খতীবগণের খুতবা প্রদান। ফেব্র“য়ারী ওলামা সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ূম, সহ-প্রচার সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, এড. আবদুল মতিন, মুফতী হেমায়েতুল্লাহ, সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, মাওলানা নেছার উদ্দিন প্রমুখ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন