বুধবার, মার্চ ০৬, ২০১৩

শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি পরিদর্শন করলেন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি


ষ্টাফ রিপোটার : এ এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। আর এই অবিস্মরণীয় মুহূর্তের স্বাক্ষী হয়ে থাকল শিলাইদহের মানুষ। নোবেল বিজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি ধন্য কুষ্টিয়ার শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে এসে অভিভূত হলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের নড়াইলের জামাই বাবু প্রণব মুখার্জি। গতকাল বিকেল ৪ টা ৪৫ মিনিটে টাঙ্গাইল থেকে সোজা হেলিকাপ্টার যোগে শিলাইদহের আলাউদ্দিন নগর হাইস্কুল মাঠে এসে নামেন প্রণব মুখার্জি। এখানে তাঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। আলাউদ্দিন নগর হেলিপ্যাড মাঠ থেকে গাড়ি বহর যোগে শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে এসে পৌছান ঠিক বিকেল ৫ টায়। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা তরুণ, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা পরিষদের প্রশাসক জাহিদ হোসেন জাফর, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সদর উদ্দিন খান, শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন তারেকসহ বিশিষ্ট জনেরা তাঁকে শিলাইদহে বরণ করে নেন। এ সময় তাঁর সফর সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সংসদীয় প্রতিনিধি দলের কংগ্রেসের রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী, তৃণমূল কংগ্রেসের মুকুল রায়, সিপিআইএমের সীতারাম ইয়েচুরী, বিজেপি’র চন্দন মিত্র ও আসামের কংগ্রেস নেতা ভূবনেশ্বর কলিতা প্রমুখ। হেলিকাপ্টার যোগে এসে গাড়ি বহর নিয়ে সোজা শিলাহদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে আসেন প্রণব মুখার্জি। অতিথিদের নিয়ে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি পরিদর্শন করেন তিনি। এর পর কুঠিবাড়ির বকুলতলায় একটি বকুল গাছের চারা রোপন করেন। বর্জায় বসে গান শোনেন ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে’। এর পর আবার গাড়ি বহর যোগে ৫ টা ৫০ মিনিটে হেলিপ্যাডে চোড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রণব মুখার্জি। ডাবের পানি, ছবেদা, কলা, পেয়ারা, নারকেল কুল, আপেল কুল, দুধ চমচম, সন্দেশ, স্যান্ড উইচ দিয়ে আপ্যায়ন করানোর ব্যবস্থা থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে তা হয়নি। ভারতের রাষ্ট্রপতির কুঠিবাড়িতে আগমন উপলক্ষে নতুন সাজে সাজানো হয় বিশ্বকবির স্মৃতি বিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িকে। কুঠিবাড়িতে অবস্থানকালে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহার্য জিনিসপত্র দর্শন করেন। পাশাপাশি কুঠিবাড়ি চত্বরে একটি বকুল গাছের চারা রোপন করেন। যাবার সময় তাঁর সাথে ১০ কেজি করে কুষ্টিয়ার বিখ্যাত দুধ চমচম আর সন্দেশ দিয়ে দেয়া হয় নিয়ে যাবার জন্য। এদিকে ভারতের রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে পাল্টে যায় শিলাইদহ কুঠিবাড়ির চেহারা। সব কিছুতেই লাগে পরিবর্তনের ছোঁয়া। আলাউদ্দিন নগর থেকে শুরু করে কুঠিবাড়ি পর্যন্ত ভাঙ্গাচোরা রাস্তাটি ঠিকঠাক করা হয় । মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয় জরাজীর্ণ এই রাস্তাটি। ১২ ফুট চড়রা রাস্তা বাড়িয়ে করা হয় ১৮ ফুট। রাস্তার দু’ধার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। রং করা হয় দুই পাশে অবস্থিত গাছের নিচের অংশ। ভারতের রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে নতুন রুপ পায় কুঠিবাড়ি।
এদিকে প্রণব মুখোপাধ্যায় আগমনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয় পুরো কুঠিবাড়ি এলাকা। নিরপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে কুঠিবাড়িসহ আশেপাশের বাসিন্দাদের তালিকা তৈরি করে গোয়েন্দা সংস্থা। সব মিলিয়ে ২০ মিনিট অবস্থান করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। তার পর হেলিকাপ্টার চেপে ঢাকার পথে ওড়েন বাংলাদেশের জামাই বাবু ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন