বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৩

ফকির লালন শাহ’র ১২৩ তম মৃত্যু বার্ষিকীর প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার : কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেছেন, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র সার্বজনিন বাউলতত্বের গান স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে এক মহামিলন ঘটিয়েছে। তাঁর মানব দর্শন আজ আর কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ীর মধ্যে আবদ্ধ নেই। সহজিয়া ফকিরী মতবাদের জাতহীন মানব দর্শন ও সঙ্গীত বিশ্বাঙ্গনে সার্বজনিন বিদিত। বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ সকল ধর্মের সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে সদা সত্য পথে চলতে মানুষকে অহিংস মানতার পথে ডাক দিয়ে ছিলেন। তিনি অহিংস মানবতার ব্রত নিয়ে দেহতত্ব ও ভাবতত্ব অসংখ্য গান সৃষ্টি করে গেছেন। তাঁর এই অমর সৃষ্টি সঙ্গীত কোন ধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সকল ধর্মের উর্ধে থেকে মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ মানব মুক্তির জন্য ফকিরীবাদের মাধ্যমে ডাক দিয়েছিলেন। আগামীতে এই মহান মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১২৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী বা তিরোধান দিবস পালনে প্রতিবারের ন্যায় এবারো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত ২ বছর জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে বাউল সম্রাটের স্মরণোৎসব ও মৃত্যুবার্ষিকী বা তিরোধান দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলেও এবারের অনুষ্ঠান জেলা প্রশাসন ও লালন একাডেমির নির্বাচিত কমিটির তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে অনুষ্ঠানটিকে সফল, সুন্দর ও স্বার্থক করতে কুমারখলির ছেঁউড়িয়াসহ কুষ্টিয়াবাসীর সার্বিক
সহযোগিতা প্রয়োজন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১২৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী বা তিরোধান দিবস পালনের লক্ষ্যে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বিগত ১২৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী বা তিরোধান দিবসের বিস্তারিত তুলে ধরে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মখলেছুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ড.মোল¬া মাহমুদ হাসান। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা এসিল্যান্ড উত্তম কুমার রায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রাসেল মিয়া, সৈয়দ আশরাফুজ্জামান। বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১২৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী বা তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানকে সফল, সুন্দর ও স্বার্থক করে তুলতে আগত সূধীজনের মধ্য থেকে উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন এবং অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীমুন রাজিব, খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্ত আবু হেনা মোস্তফা কামাল, লালন একাডেমির সহ-সভাপতি ম.মনিরুজ্জামান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন, লালন একাডেমির সহ-সাধারণ সম্পাদক সেলিম হক, নির্বাহী সদস্য মাহমুদুর রহমান আল কাদেরী, আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, এ্যাড. আলী আকবার মোল্লা, এ্যাড. শহিদুল হক, আলতাফ হোসেন মোল্লা, শেখ আহম্মদ আলী, আব্দুল কুদ্দুস, নাসির উদ্দিন সরকার, প্রবীণ রাজনীতিবিদ আব্দুল বারী জোয়ার্দ্দার, কুষ্টিয়া সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.জমির উদ্দিন, কুষ্টিয়া সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেফালি রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বক্কর সিদ্দিক, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাছিম উদ্দিন আহমেদ,আ’লীগ নেতা ডা.আমিনুল হক রতন, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার হাজী রফিকুল আলম টুকু, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকাররম হোসেন মোয়াজ্জেম, বিশিষ্ট কলামিষ্ট শেখ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ মিন্টু, এ্যাড.আক্তারুজ্জামান মাসুম,জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসীন, জেলা যুবলঅীগের আহবায়ক রবিউল ইসলাম,জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল¬াহ আল মামুন, কুষ্টিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর আনিচ কোরাইশী, পল¬¬ী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মুখলেছ গনি, জেলা তথ্য কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান, এ্যাড. শরীফ উদ্দিন রিমন, ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক নুর হাসান আহমেদ, সমাজ সেবার ছানোয়ার হোসেন,যুব উন্নয়নের উপ-পরিচালক মোর্শেদ আলম, শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মখলেছুর রহমান, লালন একাডেমির নির্বাহী সদস্য আলতাফ হোসেন মোল¬া, বাউল আব্দুল কুদ্দুস, শেখ আহাম্মদ আলী, আব্দুর রাজ্জাক, মাহমুদুর রহমান আল কাদেরী, এডাবের আনোয়ার হোসেন বুলবুল, ব্রাকের মোতাহার হোসেন, দিশা’র এমআর ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও আরশীনগর সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম রাশেদ, মহিলা উন্নয়ন সমিতির সভানেত্রী নিলুফা আকতার নাসরিন, কবি সুকদেব সাহা, কবি দরবেশ হাফিজ, তারিকুল হক তারিক প্রমুখ। সভায় এবারের মৃত্যুবার্ষিকী বা তিরোধান দিবসে লালন সম্পর্কে কিছুই জানেন না এমন কোন অজ্ঞ আলোচককে লালন নিয়ে আলোচনা করতে দেয়া হবেনা। যারা বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহকে নিয়ে নিয়মিত গবেষনা করেন কেবল তারাই এবারের আলোচক হিসেবে থাকবেন। এছাড়াও সকল প্রকার অনিয়ম দূর্নীতি বন্ধে মৃত্যুবার্ষিকী বা তিরোধান দিবস উপলক্ষে লালনের মাঠ উপযুক্ত মূল্যে টেন্ডারের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়ারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সবার সিদ্ধান্তক্রমে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১২৩ তম ৫দিন ব্যাপী মৃত্যুবার্ষিকী বা তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য সভায় উপস্থিতিদের সবাইকে মূল কমিটির সদস্য সহ বেশ কয়েকটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৬ অক্টোবর ঈদুল আযহার কারনে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে ১৭ অক্টোবর থেকে।  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন